
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শনিবার একটু বেলা হতেই জানা গিয়েছিল কলকাতা, সল্টলেক, পুরুলিয়া, জামুড়িয়া সহ ৩৬ জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। রাতে জানা গেল, শনিবার নয়, সিবিআইয়ের তৎপরতা চলছে ৪৮ ঘন্টা আগে থেকে। এও জানা গিয়েছে, বেআইনি ভাবে কয়লা পাচারের অভিযোগে অনুপ মাঝি ওরফে লালার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে সিবিআই। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টার সময় ওই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
সেই সঙ্গে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে ইস্টার্ন কোলফিল্ডের চার জন অফিসারের বিরুদ্ধেও। ওই চার জন হলেন ইসিএলের জেনারেল ম্যানেজার অমিত কুমার ধর, কুনুসতোরিয়ার এরিয়া সিকিউরিটি ইনস্পেক্টর ধনঞ্জয় রাই, কাজোরা এলাকায় জেনারেল ম্যানেজার জয়েশ চন্দ্র রাই এবং কাজোরা এলাকার সিকিউরিটি ইনচার্জ দেবাশিস মুখোপাধ্যায়।
কে এই লালা?
সিবিআইয়ের এফআইআরে বলা হয়েছে, অনুপ মাঝি ওরফে লালাই হল ইসিএল এলাকায় বেআইনি কয়লা খনন, চুরি ও পাচারের প্রধান হোতা। ইসিএলের ওই চার অফিসারের সঙ্গে যোগাসাজস করে খুব সংগঠিত ভাবে কয়লা চুরি করা হত। ইসিলের লিজ নেওয়া জায়গা থেকে কয়লা চুরি করে তা রেলের সাইডিংয়ে নিয়ে যাওয়া হত। তার পর রেলের এক শ্রেণির অফিসার, সিআইএসএফের সঙ্গে আঁতাত করে সেই কয়লা পাচার করা হত।
প্রসঙ্গত, লালা এখন বাংলার রাজনীতিতেও চর্চিত নাম। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ যখন পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসেছিলেন সেদিনও লালার বাড়িতে অফিসে আয়কর দফতরের তল্লাশি হয়েছিল। তার পর অমিত শাহ এক সাংবাদিক বৈঠকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, শুনলাম এখানে কোনও লালাজির বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে। কিন্তু তা নিয়েও মমতাজি রেগে গেছেন। আরে কয়লা চুরি হলে তো বাংলারই ক্ষতি। রাজ্যের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে।
সিবিআইয়ের এফআইআর অর্থবহ
বেআইনি কয়লা পাচার নিয়ে বিভিন্ন স্তরে যে অনেক দিন ধরে তদন্ত চলছে তা এদিন সিবিআইয়ের এফআইআরে পরিষ্কার। তাতে বলা হয়েছে, মে মাসে ইসিএলের টাস্ক ফোর্স ও ভিজিলেন্স বিভাগের যৌথ অভিযানেই বেআইনি কয়লা খনন ও চুরির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল। ওই অভিযানের সময় প্রচুর সংখ্যায় গাড়ি আটক করা হয়। যে গাড়িগুলোর মাধ্যমে কয়লা পাচার হত। সেই সঙ্গে বেআইনি কয়লা খননের মেশিন ও সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হয়। তাতেই বোঝা যায় যে খুবই সংগঠিত ভাবে কুনুসতোরিয়া ও কাজোরা এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণে কয়লা চুরি করছে মাফিয়ারা।
সিবিআইয়ের ওই এফআইআরে বলা হয়েছে, আরও কিছু অফিসার ও ব্যক্তি দেশের সম্পদ চুরির নেপথ্যে রয়েছে। যারা কয়লা চুরিতে মদত দিয়েছে বা যাদের সঙ্গে যোগসাজস করে এই চক্র চলত। এফআইআরে তাদের নাম নেই।
অনেকের মতে, এর অর্থ হল, সিবিআই আরও কিছু লোকজনের খোঁজে রয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। খুব শিগগির হয়তো তাও ফাঁস হবে।