
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের অর্জুন নগরে সভামঞ্চে বসে শুভেন্দু অধিকারী। খবরটা তখনই এসেছিল। আর্থিক দুর্নীতি মামলায় অ্যালকেমিস্টের মালিক তথা তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ কেডি সিংকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
টাটকা খবর। তাই বক্তৃতা শেষে শুভেন্দু মঞ্চ থেকে নামতেই সাংবাদিকরা তাঁর প্রতক্রিয়া জানতে চান। শুভেন্দুও কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন কেডি আটকের ঘটনায়।
এদিন প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ কেডি সিং এবং তাঁর সংস্থা পশ্চিমবাংলার ৭০ লক্ষ মানুষকে প্রতারিত করেছেন। যাঁরা একেবারে প্রান্তিক মানুষ তাঁরা টাকা রেখে সর্বস্ব খুইয়েছেন। আমি বলব, শুধু গ্রেফতার নয়। সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে প্রতারিত মানুষের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করুক ইডি।”
এর পরেই বিজেপি নেতা বলেন, “কান টানলে মাথা আসবে। কেডি সিংকে দিয়েই তো নারদ করিয়েছিলেন। আর দিল্লিতে কার কার বিয়েতে কেডি সিং স্পন্সর করেছিল তাও সবাই জানে।” তাঁর কথা, “এক প্রভাবশালীর ভ্রাতষ্পুত্র, বাকিটা বুঝে নিন।”
কেডি গ্রেফতার হওয়ার পর তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “এটা অনেক দিন আগেই হওয়া উচিত ছিল। আমিও দলকে সতর্ক করেছিলাম।” সেইসঙ্গে কুণালবাবু আরও বলেন, “কেডি সিংকে তৃণমূলে আনার পিছনে মূল ভূমিকা ছিল মুকুল রায়ের’। তাঁর কথায়, ‘সুদীপ্ত সেনও সেই কথা বলেছে”।
শাসক দলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় আবার বলেছেন, তৃণমূলের সঙ্গে অনেক দিনই কেডি সিংহের সম্পর্ক নেই। বেঅআইনি আর্থিক লেনদেন মাময়া ইডির কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করার অধিকার রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা আর কী বলতে পারি!
তবে মুকুল বাবু দাবি করেছেন, কেডি সিংকে বিজেপিতে আনায় তাঁর ভূমিকা ছিল না। মুকুল ঘনিষ্ঠদের কথায়, তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেওয়া যায়, মুকুল রায়ের হাত ধরেই তৃণমূলে এসেছিলেন কে ডি সিং, কিন্তু সর্বোচ্চ নেতৃত্বের ছাড়পত্র ছাড়া তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ করার ক্ষমতা কি মুকুলের ছিল? তা ছাড়া কেডি সিংয়ের কোম্পানির হেলিকপ্টার কারা ব্যবহার করেছিলেন, কত বার ব্যবহার করেছিলেন, কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, সেই হিসাবও হবে নিশ্চয়ই।
প্রসঙ্গত কেডি সিংয়েরী সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। আর্থিক দুর্নীতি কাণ্ডে নাম জড়ানোর পর মিঠুন চক্রবর্তী তৃণমূল থেকে মনোনীত রাজ্যসভার সদস্যপদ থেকে মেয়াদ শেষের বেশ কিছুটা আগেই ইস্তফা দেন।
এখন দেখার, শুভেন্দুর কথা অনুযায়ী চিটফান্ড কেলেঙ্কারির কান ধরে মাথার দিকে কতটা এগোয় ইডি।