
শিল্প সম্মেলনে লগ্নির চেয়ে কি জাঁকজমকের খরচই বেশি, অর্থসচিবের কাছে হিসেব চাইলেন রাজ্যপাল
ফি বছর অনুষ্ঠিত হওয়া বেঙ্গল বিজনেস সামিট তথা শিল্প সম্মেলনে এ পর্যন্ত কত টাকা খরচ হয়েছে তার হিসেব চাইলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। টুইট করে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, তিনি অর্থসচিবের থেকে হিসেব চেয়েছেন।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রেশন—প্রায় সব ইস্যুতেই নবান্ন বনাম রাজভবনের সংঘাত দেখেছে বাংলা। এবার সেই তালিকায় নবতম সংযোজন রাজ্যের অর্থ দফতর।
ফি বছর অনুষ্ঠিত হওয়া বেঙ্গল বিজনেস সামিট তথা শিল্প সম্মেলনে এ পর্যন্ত কত টাকা খরচ হয়েছে তার হিসেব চাইলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। টুইট করে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, তিনি অর্থসচিবের থেকে হিসেব চেয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি এও লিখেছেন, “মনে করা হচ্ছে, এই সম্মেলন থেকে যা লগ্নি এসেছে তার চেয়ে সম্মেলন করতে খরচ বেশি হয়ে গিয়েছে।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বিতীয়বার সরকারে আসার পর থেকে রাজারহাটের বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে শিল্প সম্মেলন বেশ জাঁকজমক করেই হয়েছে। ধারাবাহিক ভাবে সেই সামিট থেকে শিল্পের প্রতিশ্রুতি এসেছে অনেক। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ মউ সাক্ষরের নামে স্রেফ বুজরুগি হয়েছে। আর জনগণের টাকা ধ্বংস হয়েছে।
অর্থ সচিবের কাছে @MamataOfficial এর আমলে শুরু হওয়া বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট(শিল্প সম্মেলন) এর বিস্তারিত জানতে চেয়েছি। মনে করা হচ্ছে, এই সম্মেলন থেকে যা লগ্নি এসেছে তার চেয়ে সম্মেলন করতে খরচ বেশি হয়ে গিয়েছে। (1/4)
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) August 1, 2020
এদিন রাজ্যপাল ওই শিল্প সম্মেলন নিয়ে একাধিক টুইট করেছেন। পৃথক একটি টুইটে ধনকড় লিখেছেন যে, তিনি অর্থসচিবের কাছে জানতে চেয়েছেন, প্রতি বছর কত এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে? কত লগ্নি ও চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে? এবং বাস্তবে কত লগ্নি হয়েছে ও কত জন চাকরি পেয়ছেন?
এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত করতে বিশেষ কাউকে বা কোনও নির্দিষ্ট সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে কিনা তাও জানতে চেয়েছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। আর্থিক অনিয়ম নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। জানতে চেয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি কি সরাসরি টাকা পেয়েছে নাকি ফিকির মাধ্যমে পেয়েছে?
গ্লোবাল বিজনেস সামিট তথা জিবিএস নিয়ে বিরোধীরা আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, নিজেদের কিছু পেটোয়া সংস্থাকে পাইয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করা ও বাইরে থেকে লোক ডেকে এনে কয়েক দিন ধরে খাওয়াদাওয়া করে ফুর্তি করা ছাড়া ওই সম্মেলনের আর কোনও গুরুত্ব নেই।
টুইটারে একাধিক প্রশ্ন তুললেও রাত পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। আজকে ইদের কারণে নবান্নও বন্ধ ছিল। ফলে অর্থ দফতরের কর্তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি। এ নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলে তা এই প্রতিবেদনে আপডেট করা হবে।
বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি তথা বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেন, “যতদিন তৃণমূল সরকার আছে এ রাজ্যে কেউ শিল্প করতে আসবে না। আর কয়েক মাস বাদেই এই বন্ধ্যাদশা কেটে যাবে।” এক বাম নেতার কথায়, “আমরা তো কবে থেকেই তৃণমূলকে জিজ্ঞেস করছি যে, মুখ্যমন্ত্রী এই ন’বছরে কয়েকশো দুর্গাপুজো, কালীপুজোর মণ্ডপের ফিতে কেটেছেন, এখনও বাংলার মানুষ কেন দেখল না যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা কারখানার ফিতে কাটছে? শাসকদলের মুখ নেই জবাব দেবে!”