
দ্য ওয়াল ব্যুরো, হাওড়া: হঠাৎ করেই সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছেন ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা। কিন্তু ফুটবলপ্রেমীদের জন্য রেখে গিয়েছেন অসংখ্য স্মৃতি। আর ফুটবল দিয়েই যাঁর জীবিকা চলে, তাঁর কাছে মারাদোনা যে এক আবেগের জায়গা হবেন তা সন্দেহাতীত। তেমনই হাওড়ার বালির সতীশ চন্দ্র লেনের বাসিন্দা উত্তম দাস। জাগলিং করেই জীবিকা চলে তাঁর। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সরকারি প্রকল্পেও ডাক আসে। কিন্তু তাই বলে মারাদোনার সামনে তিনি ফুটবলে জাগলিং করে দেখাতে পারবেন তা স্বপ্নেও ভাবেননি উত্তম। কিন্তু সেই সুযোগ হয়েছিল। একবার নয় দু’বার।
কলকাতায় দু’বার এসেছিলেন মারাদোনা। ২০০৮ সালের ৬ ডিসেম্বর সল্টলেক স্টেডিয়ামে প্রথম এসেছিলেন। এরপর ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর আসেন তিনি। দু’বারই তাঁর সামনে জাগলিং দেখাতে পেরেছিলেন উত্তম দাস। প্রথমবার জাগলিং দেখানোর পরে নাকি তাঁকে জড়িয়ে ধরেছিলেন মারাদোনা। চুমু খেয়েছিলেন তাঁর গালে। সেই স্পর্শ আজও ভুলতে পারেননি তিনি। সেদিন বাড়ি ফেরার পর তিনদিন স্নান করেননি উত্তম। ঈশ্বরের স্পর্শ রেখে দিতে চেয়েছিলেন শরীরে। এটা স্বপ্ন না বাস্তব ভাবতে ভাবতেই কেটে গিয়েছিল অনেকগুলো দিন।
দ্বিতীয়বার নিজের সই করা একটি ফুটবল তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন মারাদোনা। দেশে-বিদেশে বহু জায়গায় ফুটবল জাগলিং দেখিয়েছেন উত্তম। প্রশংসাও কুড়িয়েছেন এই ফুটবল জাগলার। কিন্তু মারাদোনার জড়িয়ে ধরা এক অন্য প্রাপ্তি। আর তাই তো দিয়েগোর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না উত্তম দাস। ভাবতেই পারছিলেন না এত তাড়াতাড়ি চিরতরে চলে যাবেন তাঁর স্বপ্নের নায়ক। বারবার মোবাইলে দেখছিলেন সে দিনের সেই মুহূর্তের ফ্রেম বন্দি করা ছবিগুলো।
উত্তমের কথায়, এত বড় ফুটবলার আর আসবে না কেউ। তাঁর স্বপনে মননে চিরতরে থাকবেন ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা।