
দ্য ওয়াল ব্যুরো, মালদা: হোটেল ব্যবসার আড়ালে রমরমিয়ে চলছে ডান্স বার। কলকাতা এবং ভিন রাজ্য থেকে সেখানে টাকার বিনিময়ে নিয়ে আসা হচ্ছে মেয়েদের। তার পর প্রতিদিনই চলছে অশ্লীল নাচ। অভিযোগ, খরিদ্দার টানতে নাকি এমনই রাস্তা নিয়েছেন মালদা শহরের এক সুপ্রষ্ঠিত হোটেলের মালিক। জানা গিয়েছে, হোটেলে মদ বিক্রির অনুমতি থাকলেও ডান্স বার চালানোর অনুমতি দেয়নি পুলিশ এবং প্রশাসন। কিন্তু তা সত্ত্বেও কীভাবে সকলের নাকের ডগায় এমন রমরম করে ডান্স বার চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামান্য দূরেই রয়েছে একটি নামী হোটেল। অভিযোগ, প্রতিদিন সন্ধে হলেই ওই হোটেলের ডান্স বারে বসছে চটুল নাচের আসর। সঙ্গে বিকোচ্ছে দেদার মদ। স্থানীয়দের অভিযোগ, অল্প বয়সী যুবক-যুবতীর পাশাপাশি এই হোটেলে হামেশাই ভিড় জমাচ্ছেন মাঝ বয়সী পুরুষরাও। ক্রমশ বিষিয়ে যাচ্ছে চারপাশের পরিবেশ। এলাকার বাসিন্দাদের উপর বিশেষ করে ছোটদের উপর এর খারাপ প্রভাব পড়বে বলে চিন্তায় রয়েছেন স্থানীয়রা। আর এমন বেআইনি কারবার দেখার পরেও প্রশাসনের কেন কোনও হেলদোল নেই তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিভিন্ন রকমের অসামাজিক কাজের আখড়া হয়ে উঠছে এই হোটেলের ডান্স বার। গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকে মদের দোকান এবং বার। বেপাড়ার উটকো লোকের আলাগোনাও লেগেই থাকে। এর আগে একাধিকবার হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে পুলিশ, প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।
এই প্রসঙ্গে মালদা অ্যাসোসিয়েশন ফরেন লিকার অফ সিএস-এর সম্পাদক কৃষ্ণ ঘোষ জানিয়েছেন, “গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কাছের ওই হোটেলের বিরুদ্ধে সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি অভিযোগ জানানো হয়েছে আবগারি দফতরে। বেআইনিভাবে মদের দাম বেশি নেওয়া এবং গভীর রাত পর্যন্ত মদের দোকান ও বার খুলে রাখার অভিযোগ জানানো হয়েছে। সত্যিই যদি ডান্স বার চলে তবে বিষয়টি খুবই লজ্জাজনক। আবগারি দফতরের উচিত অবিলম্বে এ বিষয়ে তদন্ত করে হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।” তিনি আরও বলেছেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার পরে ফের আবগারি দফতরে অভিযোগ জানানো হবে। পাশাপাশি মালদা জেলার আবগারি দফতরের সুপারিনটেনডেন্ট সুপ্রতিম মুখার্জি জানিয়েছেন, ডান্স বারের জন্য কোনও লাইসেন্স হয় না। এই অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে ।
দিনের পর দিন এভাবে বেআইনি কাজকর্ম চলতে থাকায় সরব হয়েছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং মালদা কলেজের পড়ুয়ারাও। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ, যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয় গেটের প্রায় উল্টো দিকেই এভাবে ডান্স বার চলছে তাতে সকলের উপরেই এর কুপ্রভাব পড়বে। সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা অসামাজিক এবং অনৈতিক কাজকর্মে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও থাকছে। এ ছাড়া যে কোনও সময় বড় কোনও অঘটন ঘটে যেতে পারে। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি অবিলম্বে এই ধরনের ডান্স বার বন্ধ করতে হবে। নাহলে তাঁরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হবেন। এমনকি বৃহত্তর আন্দোলনে মাধ্যমে পথে নামার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে ছাত্র সংগঠনের তরফ থেকে।
যদিও এই সমস্ত অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন হোটেল মালিক পিন্টু সাহা। তার দাবি এই সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে। হোটেলের আড়ালে এখানে কোনওরকম ডান্স বার চালানো হয় না।