
রফিকুল জামাদার, ব্রিগেড থেকে
২০১৯ সালের ১৯ জানুয়ারি। তৃণমূল কংগ্রেসের ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার ব্রিগেড সভার কথা মনে পড়ে? মহামেডান টেন্ট থেকে হেস্টিংসয়ের আস্তাবল, সিইএসসির সদর দফতরের সামনে থেকে পার্ক স্ট্রিটের কোণ পর্যন্ত স্করপিওতে ছয়লাপ। তাতে চড়ে এসেছিলেন শাসকদলের বহু ছোট, সেজ, মাঝারি নেতা ও তাঁদের অনুগামীরা।
একুশের প্রথম ব্রিগেডের যেন তৃণমূলের সেই ব্রিগেডের সঙ্গে আসমান জমিন ফারাক। ময়দানের আনাচকানাচ ঘুরে যা দেখা গেল তা হল, বাস, ম্যাটাডোর, ছোট হাতি, লরির মেলা। যাতে করে জেলা থেকে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ সমর্থকরা এসেছেন জোটের ব্রিগেডে।
তৃণমূলের পৌরোহিত্যে ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার ব্রিগেডে জমায়েত তেমন স্বতঃস্ফূর্ত ছিল না বলে সে বার অনেকেই সমালোচনা করেছিলেন। কেন স্বতঃস্ফূর্ত ছিল না? শাসকদলেরও অনেকের বক্তব্য ছিল, স্করপিও সংস্কৃতিতে আবেগের রাশ আলগা হয়েছে। আগে পঞ্চায়েতের নেতারা গ্রামের, কর্মী সমর্থক, শ্রমিক মজুরদের সঙ্গে এক বাসে বা এক লরিতে ব্রিগেডে বা ধর্মতলায় আসতেন। এখন অনেক পঞ্চায়েত সদস্যও আসেন স্করপিও চড়ে। কর্মীরা আসেন বাসে।
কিন্তু বাম-কংগ্রেস কর্মীরা জমায়েতকে জমাট করতে বুথ স্তরের সংগঠনকেই গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ফলে বাস-লরি-ম্যাটাডোরের মেলা বসেছে ময়দানে। বহু মানুষ হাওড়া স্টেশনে নেমে লঞ্চ পেরিয়ে বা মিছিল করে ব্রিগেডের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। শিয়ালদহ, পার্কসার্কাস, গোলপার্ক থেকে আরও তিন মিছিল শুরু হয়েছে ব্রিগেডের উদ্দেশে।
সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, “আমরা কখনওই স্করপিও বা ছোট গাড়িতে ময়দান ছয়লাপ করিনি। যখন সরকারে ছিলাম তখনও এই জিনিস কখনও হয়নি। কারণ পার্টি থেকেই মাঝের এবং নিচু তলার নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া থাকে জমায়েতের সঙ্গেই তাঁদের আসতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “এটা শুধু আর্থিক কারণে নয়। এর কিছু বাস্তব দিক রয়েছে। জেলা থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ ব্রিগেডে আসেন, যাঁদের কাছে কলকাতা অচেনা। ফলে রাস্তায় কোনও দুর্ঘটনা হলে তখন যদি সেখানে স্থানীয় স্তরের নেতৃত্ব না থাকেন তাহলে সেই মানুষগুলোকে দিশাহারা অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়।”