
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কয়েকদিন আগে রামনগরে সভা করছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। পাশ থেকে এক অতি উৎসাহী বিজেপি সমর্থক চিৎকার করে বলেন, “দাদা মদন কী সব বলছে!”
ওমনি শুভেন্দু বলেন, “ওদের কথা বলবেন না! সব চোরগুলাকে নামিয়েছে! কে সারদায় সাড়ে তিন বছর জেল খেটেছে, কে একুশ মাস জেল খেটেছে, কে ইউএপিএ-তে দশ বছর জেলে ছিল, সেই কানকাটা, নাককাটাগুলোকে বের করে এনেছে।”
নাম না করলেও বোঝা যাচ্ছিল শুভেন্দু মদন মিত্র, কুণাল ঘোষ আর ছত্রধর মাহাতো দিকে ইঙ্গিত করছিলেন। বুধবার ছত্রধরের জেলা ঝাড়গ্রামে গিয়ে নাম না করে ফের তাঁর বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বিজেপি নেতা। এদিন শুভেন্দু বলেন, “এখানে তৃণমূলের মুখ কে? ওই যে ১০ বছর জেলে ছিল!”
এখানেই থামেননি নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতা। জনতার উদ্দেশে শুভেন্দু বলেন, “জনসাধারণের কমিটির নামে এখানকার মানুষকে জোর করে মিছিলে হাঁটাত। ওর সঙ্গে লোক নেই। নিজের বাড়িকে তিন তলা করেছে। একটা ছেলেকে পুলিশের ইনফর্মারে ঢুকিয়েছে। আর একটাকে আমার ঘাড়ে চাপিয়েছিল। বিদ্যাসাগর সমবায় ব্যাঙ্কের অস্থায়ী কর্মী। নবান্নের নির্দেশে আমাদের সেসব করতে হয়েছিল।”
২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত জেলে ছিলেন ছত্রধর। মুক্তি পাওয়ার পর তাঁকে তৃণমূল রাজ্য কমিটির সদস্য করেছে। এমনকি মাস দেড়েক আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “ছত্রধরকে মাওবাদী যোগে ফাঁসানো হয়েছিল। ও অরিজিনাল তৃণমূল।” এদিন শুভেন্দু ঝাড়গ্রামের সভায় বলেন, “এই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের একেবারে বিচ্ছিন্ন করতে হবে।”

শুভেন্দু আরও একবার জামদা সার্কাস মাঠের সভায় অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়া জেলা পরিষদ বিজেপি জিতেছিল। কিন্তু মাঝ রাতে পুলিশ দিয়ে জোর করে বিজেপিকে হারানো হয়েছে। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েতের পর আমায় নেত্রী জিজ্ঞেস করেছিলেন, এমন হল কী করে? আমি বলেছিলাম বিনপুর ১ ও ২ নম্বর ব্লক, জামবনি ও ঝাড়গ্রাম সদর—এই চারটে ব্লকে সোশ্যাল অডিট করুন। তাহলেই বুঝে যাবেন। যে নেতার ভাঙা সাইকেল ছিল তার এখন সাদা স্করপিও, ছেলে-মেয়ের জন্মদিনে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করছে।”
পঞ্চায়েত ভোটে জঙ্গলমহলে খারাপ অলের পরে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ ময়নাতদন্তেও জঙ্গলমহলের স্থানীয় নেতাদের জনবিচ্ছিন্নতা ও ফুলেফেঁপে ওঠার কথা উঠে এসেছিল। একুশের আগে লালমাটির মহল্লায় দাঁড়িয়ে সেটাই আরও একবার উস্কে দিতে চাইলেন শুভেন্দু অধিকারী।