
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে একই পরিবারের তিনজনের। গুরুতর ভাবে আহত হয়েছেন আরও একজন। পুলিশ সূত্রে খবর, গতকাল অর্থাৎ সোমবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমার মন্তেশ্বর থানার বাঘাসন গ্রামে। জানা গিয়েছে, যে পরিবারে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে সেই পরিবারের কর্তা রেল পুলিশের কর্মরত ছিলেন। এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, পরিবারের কর্তা সুবল চন্দ্র সে, তাঁর স্ত্রী রেখা দেবী এবং ছেলে স্নেহাংশুর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সুবলবাবুর মেয়ে রিমঝিম প্রাণে বেঁচে গেলেও মারাত্মক ভাবে পুড়ে গিয়েছে তাঁর শরীরের বেশির ভাগ অংশ। দগ্ধ অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, রিমঝিমের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
মৃত সুবলবাবুর দাদা বাসুদেব দে পুলিশকে জানিয়েছেন, আজ ভোরে ভাইঝি রিমঝিম তাঁকে ফোন করে জানায় এই ঘটনা। পাশেই থাকেন তিনি। ভাইয়ের পরিবারের এমন খবর শুনেই দ্রুত সেখানে পৌঁছন বাসুদেববাবু। ইতিমধ্যে পুলিশেও খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মন্তেশ্বর থানার পুলিশ। বাড়ির দরজা ভেঙে তিনজনের অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার করে তারা। একপাশে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পড়েছিলেন রিমঝিম। শরীর ঝলসে গেলেও প্রাণ বেঁচে ছিলেন তিনি।
সূত্রের খবর, গতকাল ছেলেকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন সুবলবাবু। ফেরার পর স্ত্রী রেখাদেবীর সঙ্গে বচসা বাঁধে তাঁর। নিমেষের মধ্যে অশান্তির পারদ চরমে ওঠে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমুল কথা কাটাকাটি শুরু হয়, চিৎকার-চেঁচামেচি টের পেয়েছিলেন প্রতিবেশীরাও। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার সময় ছেলেমেয়েকে ঘরের বাইরে বেরিয়ে যেতে বললেও তারা যায়নি। এরপর হঠাৎই ঘরের সমস্ত আসবাবপত্রে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন সুবলবাবু। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে ঘর। সে সময় জেঠুকে ফোন করে কোনওক্রমে সব ঘটনা জানায় রিমঝিম। তিনি এসে ভাইঝিকে বাঁচাতে পারলেও ততক্ষণে ঝলসে গিয়েছেন সুবলবাবু, তাঁর স্ত্রী ও ছেলে।
এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ। ঠিক কী কারণে স্বামী-স্ত্রীর ঝামেলা হয়েছিল, কী এমন কারণ ছিল যে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে এমন কাণ্ড করে বসলেন সুবলবাবু তা জানারই চেষ্টা করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। প্রতিবেশী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এই গোটা ঘটনার পিছনে ঠিক কী কারণ রয়েছে এবং এই ঘটনার সমস্ত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।