
জিতেন্দ্র কেন বৈদ্যবাটিতেই গেরুয়া শিবিরে যোগ দিলেন, বিজেপির কি অন্য অঙ্ক রয়েছে
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তাঁকে নিয়ে কম নাটক হয়নি। সেই সুনীল মণ্ডলের বাড়িতে রাতের বৈঠক থেকে শুরু। তারপর তাঁর সম্পর্কে বাবুল সুপ্রিয়র ফুঁসে ওঠা, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে তাঁর মিটিং, ববি হাকিমের সঙ্গে ঝগড়া, মধ্যস্থতা করতে অরূপ বিশ্বাসের মাঠে নামা—ঘটনার ঘনঘটা পেরিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হুগলির বৈদ্যবাটিতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক, পশ্চিম বর্ধমানের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি।
কিন্তু এই যোগদানের স্থান নিয়েই জল্পনা এবং কৌতূহল তৈরি হয়েছে। অনেকে বলেন, রাজনীতিতে সব কিছুর পিছনেই একটা কারণ থাকে। আবার কেউ কেউ বলেন, সব কিছুতে অত প্যাঁচঘোচ দেখা ঠিক নয়। তবে অনেকেরই কৌতূহল, আসানসোল থেকে ১৮৪ কিলোমিটার উজিয়ে কেন বৈদ্যবাটিতে এসে বিজেপিতে যোগ দিলেন জিতেন?
অনেকে বলছেন, হয়তো দিলীপ ঘোষ এদিন বৈদ্যবাটিতে কর্মসূচি করতে এসেছিলেন বলে জিতেনও চলে এসেছিলেন। আবার অনেকে বলছেন, হয়তো অন্য অঙ্ক মাথায় রেখে বৈদ্যবাটিতে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ানো হয়েছে জিতেনকে। কী অঙ্ক? বৈদ্যবাটি চাঁপদানি বিধানসভার মধ্যে পড়ে। সেখানে একটা বড় অঞ্চলে হিন্দিভাষী হিন্দু ভোট রয়েছে। যা নির্ণায়ক শক্তি হতে পারে। তাঁদের কৌতূহল তাহলে কি জিতেনকে চাঁপদানিতে প্রার্থী করবে বিজেপি?
অনেকের মতে, জিতেনের বিরুদ্ধে বাবুল সুপ্রিয় যা বলেছিলেন তাতেই বোঝা গিয়েছিল আসানসোল-সহ সংলগ্ন এলাকার নিচুতলার বিজেপি কর্মীদের তাঁর প্রতি ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। বাবুল এও বলেছিলেন, আসানসোল, জামুড়িয়া, পাণ্ডবেশ্বর, কুলটি, বার্নপুরে বিজেপি কর্মীদের পেটানো, পার্টি অফিস ভাঙা—এই সবই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোক হয়ে হাতে কলমে করেছিলেন জিতেন্দ্র। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেছিলেন, দল সিদ্ধান্ত নিলে তিনি মানতে বাধ্য। কিন্তু মনে মনে জিতেন্দ্রকে কখনওই তিনি মেনে নিতে পারবেন না।
ফলে যাঁরা বৈদ্যবাটিতে জিতেন্দ্রর বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে কৌতূহল দেখাচ্ছেন তাঁদের অনেকের বক্তব্য, বাবুল-সহ পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপির সঙ্গে আসানসোলের প্রাক্তন মেয়রের যে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়ে রয়েছে তা অত সহজে মেটার নয়। সেক্ষেত্রে তাঁকে যদি দল জেলার বাইরে অন্যত্র টিকিট দেয় তাহলে পশ্চিম বর্ধমানের নেতাদের কিছু বলার থাকবে না। আবার অন্যদিকে চাঁপদানি জিতেন্দ্রর চেনা জায়গা। অতীতে বহু নির্বাচনে তিনি এসে এই এলাকায় বক্তৃতা করে গিয়েছেন।
তবে এই সবটাই জল্পনা। চাঁপদানি ভোট হবে চতুর্থ দফায়, ১০ এপ্রিল। আর সেখানে যদি দেখা যায় বিজেপি সত্যি সত্যিই জিতেন্দ্রকে প্রার্থী করছে তাহলে লড়াই জমবে জোরদার। কারণ বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান সেখানকার বিধায়ক। জোট প্রার্থী হিসেবে যদি তিনি নির্বাচনে লড়েন তাহলে মান্নান-বনাম জিতেন্দ্র লড়াই দেখবে চাঁপদানি। তৃণমূল কাকে প্রার্থী করে সেটাও দেখার।