
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পশ্চিম বর্ধমানঃ ভেঙে গিয়েছিল কোমরের কাছে শিরদাঁড়ার হাড়। মনে করেছিলেন, বড় শহরের বড় হাসপাতালে গিয়ে করাতে হবে চিকিৎসা। কিন্তু আসানসোল জেলা হাসপাতালেই হল অস্ত্রোপচার। সফল অস্ত্রোপচার করলেন হাসপাতালের চিকিৎসক। কলকাতার পরে কোনও জেলা হাসপাতালে এই ধরনের অস্ত্রোপচার এই প্রথম হয়েছে বলে দাবি করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের দোমহনি বাজারের বাসিন্দা ৩০ বছরের চৈতালী বাউড়ি বাড়ির ছাদে কাপড় মেলতে গেলে হনুমান তাড়া করে তাঁকে। তাড়াতাড়ি পালাতে গিয়ে ছাদের সিঁড়ি দিয়ে নীচে পড়ে কোমরের কাছে মারাত্মক আঘাত পান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স চিকিৎসক সমীরণ দে চৈতালীর কোমরের এক্সরে করে দেখেন তাঁর কোমরের কাছে শিরদাঁড়ার হাড় ভেঙে গিয়েছে। তার ফলে তাঁর ডান পা সম্পূর্ণ অবশ হয়ে গিয়েছে ও বাঁ পা ধীরে ধীরে অবশ হয়ে যাচ্ছে।
সূত্রের খবর, চিকিৎসক সমীরণ দে চৈতালীর পরিবারকে জানান অবিলম্বে অস্ত্রোপচার না করলে বরাবরের মতো চলার শক্তি হারিয়ে ফেলতে পারেন তিনি। চৈতালীর পরিবার জানায় বাইরে অস্ত্রোপচার করানোর ক্ষমতা তাঁদের নেই। তাই বিভিন্ন পরীক্ষার পরে সুপারের অনুমতি নিয়ে আসানসোল জেলা হাসপাতালেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার অ্যানাস্থেসিস্ট ডাঃ মাধব মন্ডল এবং ডাঃ সুকন্যা রায়ের সাহায্যে প্রায় এক ঘন্টা দশ মিনিট ধরে অস্ত্রোপচার করেন অর্থোপেডিক্স চিকিৎসক ডাঃ সমীরণ দে। অস্ত্রোপচারের পরে ডাঃ সমীরণ দে জানান, চারটি স্ক্রু দিয়ে একটি প্লেট বসানো হয়েছে তরুণীর শিরদাঁড়ায়। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। তরুণীর অবস্থা স্থিতিশীল। আগামী তিন মাসের মধ্যে তিনি হাঁটতে পারবেন বলেও জানিয়েছেন ডাঃ সমীরণ দে।
হাসপাতালের সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস জানিয়েছেন, কলকাতার বাইরে জেলা হাসপাতালে এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার এই প্রথম করা হল। হাসপাতালের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছে চৈতালীর পরিবার।