দ্য ওয়াল ব্যুরো: মেট্রো চ্যানেলে ধর্ণায় বসতে গিয়ে গ্রেফতার হলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, কংগ্রেস সহ সভাপতি রোহন মিত্র-সহ কংগ্রেসের একাধিক নেতাকর্মীরা। তাঁদের লালাবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চিটফান্ড কাণ্ডে প্রতারিতদের টাকা ফেরত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোমবার মেট্রো চ্যানেলে ধর্ণায় বসেছিলেন কংগ্রেস নেতারা। সেখানেই তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
সিবিআই-কাণ্ডে মমতার ধর্ণাকে সামনে রেখেই বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার প্রতারণার ঘটনায় বিজেপি ও তৃণমূলের উপরে চাপ বাড়াতে সক্রিয় বাম ও কংগ্রেস। মেট্রো চ্যানেলে ধর্ণার পর এ বার দিল্লি পাড়ি দিচ্ছেন মমতা। আগামী ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় স্তরের বিরোধী নেতাদের নিয়ে রাজধানীতে ধর্ণায় বসা কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর ঠিক এই সময়েই শাসক দলের উপর চাপ বাড়িয়ে শহরে ‘সত্যাগ্রহ’-এর পথে যুব কংগ্রেস।
বুধবার চিটফান্ডে প্রতারিতদের নিয়ে শহরে মিছিল করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। তার পরদিনই চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের ভূমিকার প্রতিবাদে নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস। আজ মেট্রো চ্যানেলে ধর্ণায় বসার কথা ছিল তাঁদের। সেই মতো ধর্ণা শুরু হওয়ার পরই ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশ। প্রথমে কথা কাটাকাটি, পরে কংগ্রেস নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। আব্দুল মান্নান, রোহন মিত্র-সহ একে একে কংগ্রেস নেতাদের ভ্যানে তুলে নেয় পুলিশ। এই মুহুর্তে লালবাজার সেন্ট্রাল লকআপে বন্দি যুব কংগ্রেস সদস্যেরা।
মান্নান বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যদি ধর্ণায় বসতে পারেন, তাহলে আমরা কেন নয়? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তো তখন কিছু বলা হয়নি। আমাদের গ্রেফতার করতে এসেছেন কেন?” একই অভিযোগ রোহন মিত্রেরও। তিনি বলেন, “সাড়ে চার বছর ধরে চিটফান্ড কাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই। এখনও কোনও কিনারা হয়নি। নিরপেক্ষভাবে কাজ করা উচিত সিবিআইয়ের। আমরা চাই দোষীদের শাস্তি হোক।” সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কবে দিল্লিতে ধর্ণায় বসছেন এবং কী করবেন সেটাই দেখার। আমরা চাই আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া ও দোষীদের শাস্তি দেওয়া। ”
কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সারদা, রোজভ্যালির তদন্ত ভার হাতে পাওয়ার পরে পাঁচ বছরে বারেবারে নিষ্ক্রিয়তা দেখিয়েছে সিবিআই। এখন লোকসভা ভোটের মুখে তাদের ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন আছেই। সারদা-কাণ্ডে অভিযুক্ত দুই নেতা মুকুল রায় ও হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে দলে নিয়ে তৃণমূলের পাশাপাশি বিজেপিও ‘প্রতারণার সুবিধাভোগী’ হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। তবে একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ধর্ণার বিরুদ্ধেও সরব তাঁরা।