
দল ছাড়তে কষ্ট হচ্ছে, মুকুলদার সঙ্গে কথা বলে নিয়েছি: সোনালি গুহ
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কালকে দিদি প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময় বলেছিলেন, “সোনালি তো অসুস্থ, তাই ওঁকে এবার প্রার্থী করা হয়নি।”
তারপর সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের সঙ্গী তথা বিধানসভার প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহর হাপুস নয়নে কান্নার ছবি ইতিমধ্যেই ভাইরাল। কিন্তু সেই কান্নাকাটি এখন অতীত। মন ভেঙে যাওয়া সোনালির চোয়াল যেন শক্ত! শনিবার দুপুরে দ্য ওয়াল-কে তিনি বলেন, “দল ছাড়তে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আমার কিচ্ছু করার নেই। আমি মুকুলদার সঙ্গে কথা বলে নিয়েছি। দাদাকে বলেছি, আমি বিজেপিতে যোগ দিতে চাই। মুকুলদা বলেছেন, আজ সন্ধে সাতটার সময় আমায় জানাবেন।”
সোনালি আরও বলেন, “আমি তো ছোটবেলা থেকে রাজনীতি করেছি। তাই রাজনীতিতে থাকতে গেলে একটা পথ খুঁজে নিতেই হয়। সেই পথই আমি খুঁজছি। তবে এই দল (পড়ুন তৃণমূল কংগ্রেস) আর করব না।”
সোনালি গুহও ছিলেন ঐতিহাসিক কেন্দ্রের বিধায়ক। সাতগাছিয়া থেকে জিততেন তিনি। অতীতে সাতগাছিয়া থেকেই দাঁড়াতেন জ্যোতি বসু। এবার সেখানে দিদি প্রার্থী করেছেন মোহনচন্দ্র নস্করকে। গতকাল প্রার্থী তালিকা দেখে সোনালি হাউমাউ কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “দিদি এটা করতে পারল, আমি ভাবতেও পারছি না। আমি তো দিদির ঘরের লোক ছিলাম। ওই বাড়িতেই থাকতাম, ঝেতাম, ঘুমোতাম। এখনও খুঁজলে হয়তো দু’একটা জামাকাপড় পাওয়া যাবে!”
তিনি আরও বলেন, “আমার সুগার আছে ঠিক কথা। তা কখনও বাড়ে আবার কখনও কমে। তার সঙ্গে প্রার্থী করা না করার কী সম্পর্ক বুঝলাম না। আমার তো এমন অবস্থা হয়নি যে আমি বিছানায় শুয়ে রয়েছি, কাজ করতে পারছি না।”
তবে শনিবার দুপুরে সোনালি যা জানিয়েছেন তার মোদ্দা অর্থ এই, তিনি এখন তাকিয়ে রয়েছেন মুকুল রায়ের দিকেই। মুকুলবাবু সন্ধে সাতটায় কী বার্তা দেন তারই অপেক্ষায় সোনালি গুহ।
নয়ের দশকের গোড়ায় একুশে জুলাইয়ের রক্তক্ষয়ী হোক বা সিঙ্গুরের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনশন—সোনালি ছিলেন দিদির পাশেপাশেই। উগ্র বিরোধী নেত্রী হিসেবে বাংলা চিনত তাঁকে। বিধানসভা ভাঙচুর হোক বা নোদাখালি থানায় ঢুকে আইসিকে হুমকি—সবই বাংলার রাজনীতির পাতায় টাটকা। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সোনালি যদি শেষ পর্যন্ত বিজেপিতেও যান তাহলে সেখানেও কি টিকিট পাবেন? কারণ ইতিমধ্যেই গেরুয়া শিবিরে দাবিদার অনেক। যাঁরা এতদিন ধরে মাটি কামড়ে বিজেপির জন্য লড়েছেন।