
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনার ভ্যাকসিন নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন ব্রাজিলেন প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো। একাধিক সাংবাদিক সম্মেলনে বোলসোনারো দাবি করেছেন, ভ্যাকসিন নেওয়া বা না নেওয়াটা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত অধিকার। আর তাঁর ইচ্ছা যে তিনি কোনওভাবেই ভ্যাকসিন নেবেন না।
করোনা আতঙ্ক হেলায় উড়িয়ে দিয়েছেন বরাবরই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতোই মাস্ক ছাড়া সাংবাদিক বৈঠকে এসে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। ব্রাজিলে সংক্রমণের বাড়বৃদ্ধির জন্য বোলসোনারোকেই দায়ী করেছেন অনেকে। তাতে অবশ্য প্রেসিডেন্টের কোনও হেলদোল নেই। তিনি পষ্টাপষ্টি বলে দিয়েছেন, “আগেই বলে রাখছি, আমি করোনার টিকা নেব না। এটা আমার ইচ্ছা।”
সংক্রমণের তালিকায় ব্রাজিল এখনও অনেকটাই এগিয়ে। বিশ্বের তিন নম্বরে রয়েছে ফুটবলের দেশ। আক্রান্ত ৬২ লাখের বেশি। মৃত্যুও লক্ষাধিক। প্রেসিডেন্ট এখনও বেপরোয়া। নিজেও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। সংক্রমণ থাকা অবস্থাতেই মাস্ক ছাড়া সামনে এসে সে কথা ঘোষণা করেছিলেন। কোয়ারেন্টাইন থেকে ফিরে এসে ফের বলেছিলেন, প্রতিদিন রোগে ভুগে বহু মানুষ মারা যান। করোনা তেমনই একটা রোগ। একে ভয় পাওয়ার কারণ নেই।
বোলসোনারো এখনও ঘরবন্দি থাকার বিরোধী। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন খেয়ে লোকজনকে কাজে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন। করোনা ঠেকাতে ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের যে কোনও উপকারিতাই নেই সেটা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। বোলসোনারো টুইট করেও একবার বলেছিলেন, টিকা তাঁর নয়, তাঁর কুকুরের প্রয়োজন।
এদিকে চিনের ভ্যাকসিন বয়কটের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভ চলছে ব্রাজিলে। নভেম্বরের শুরুতেই সাও পাওলোর রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ-আন্দোলন হয়েছে। ব্রাজিলের হেলথ রিসার্চ সেন্টার বুটানটানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সাও পাওলোতে টিকার তৃতীয় স্তরের ট্রায়াল চলছে। বুটানটান ইনস্টিটিউটের প্রধান ডিমাস কোভাস জানিয়েছেন, সিনোভ্যাকের টিকা করোনাভ্যাকের ভাল ফল দেখা গেছে স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে। প্রথম পর্যায়ে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা দেওয়া হয়েছিল। এখন দেশের ছ’টি রাজ্যে টিকার ট্রায়াল চলছে। আপত্তি উঠেছে এখানেই। আমজনতার অভিযোগ, জোর করে টিকার ডোজ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষত সাও পাওলোর গর্ভনরের নির্দেশেই হাজার হাজার মানুষকে চিনের টিকা নিতে বাধ্য করা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, জোর করে টিকার পরীক্ষা চলবে না এ দেশে। ভ্যাকসিন নিতে বাধ্য করা যাবে না।