
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চিনের উহান শহরে করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা গুনতে ভুল হয়েছে বলে জানিয়েছে চিন। জানানো হয়েছে, এই মৃত্যুর সংখ্যা আরও ৫০ শতাংশ বেশি হবে। আর তারপরেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু জানিয়েছে, এই অবস্থা সব দেশেরই হবে। একবার কোভিড ১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলে এলে সব দেশকেই ফের নতুন করে মৃতের সংখ্যা গুনে দেখতে হবে বলে জানিয়েছে হু।
জেনেভাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড ১৯ টেকনিক্যাল প্রধান মারিয়া ভেন কেরখোভ জানিয়েছেন, ডিসেম্বরে উহানের ছড়িয়েছিল করোনাভাইরাস। তাই প্রত্যেকটি মৃত্যুর হিসেব রাখা একটু কঠিন। তিনি বলেন, “এই সমস্যা সব দেশেই দেখা যাবে। একবার কোভিড ১৯ নিয়ন্ত্রণে চলে এলে তখন সব দেশকেই আবার খতিয়ে দেখতে হবে প্রত্যেকটা মৃত্যু। নতুন করে ফের সরকারি রেকর্ড খুলে দেখতে হবে সবাইকে হিসেব করা হয়েছে তো? তখন হয়তো হিসেবে কিছু বদল হতে পারে।”
মারিয়া আরও জানিয়েছেন, উহানের প্রশাসন এই মুহূর্তে তাদের ডেটাবেস নতুন করে চেক করে দেখছে। ফলে এই নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে। উহানে অনেকেই বাড়িতে মারা গিয়েছেন। অনেকে আবার বেসরকারি হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। তাই তাঁদের তথ্য সেইসময় নথিভুক্ত করা হয়নি। সেগুলো এখন হচ্ছে। তাই এই সংখ্যাটা বাড়ছে। সব দেশেরই একই অবস্থা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
হু’র আর এক আধিকারিক মাইকেল রায়ান জানিয়েছেন, “সব দেশের কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে যতটা সম্ভব ঠিক তথ্য আমাদের দিতে। কারণ গোটা বিশ্বে এই মহামারীর তথ্য আমাদের কাছে থাকলে তবেই আমরা এই মহামারী প্রতিরোধে পরিকল্পনা করতে পারব। সেটা সবার পক্ষেই ভাল। ভুল তথ্য থাকলে পরিকল্পনা করেও কোনও লাভ হবে না।”
শুক্রবার উহান প্রশাসন জানিয়েছে, এর আগে বলা হয়েছিল ২৫৭৯ জন করোনা আক্রান্ত মারা গেছেন উহানে। কিন্তু এখন উহান শহরে আরও ১২৯০ জনের মৃত্যু দেখানো হয়েছে। ফলে এই নিয়ে করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহান শহরে ৩৮৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে মোট। পুরো চিনেও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৬৩২ জন।
করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বহু দেশের তোপের মুখে পড়েছে চিন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি দাবি করেছেন, মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে মিথ্যা বলছে চিন। সংখ্যাটা কম করে ৪২ হাজার বলেও দাবি করা হয়েছে আমেরিকার তরফে। শুধু মৃতের সংখ্যা নিয়ে নয়, চিন প্রথম থেকেই করোনা সংক্রমণ নিয়ে তথ্য গোপন করেছে বলেও অভিযোগ তুলেছে আমেরিকা। এমনকি এ-ও দাবি করা হয়েছে, উহানের গবেষণাগারে জৈবরাসায়নিক অস্ত্র হিসেবে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি।
কয়েক দিন আগে ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনে লেখা হয়, “গত দু’সপ্তাহ ধরে লম্বা লাইন পড়েছে উহানের সরকারি দফতরে। সকলেই প্রিয়জনদের দাহ করার পরে ছাই সংগ্রহ করতে এসেছেন। কেউ কেউ ছ’ঘণ্টা পর্যন্তও দাঁড়িয়ে থাকছেন। শুধু তাই নয়। এখনও পর্যন্ত দফায় দফায় কবর দেওয়া হচ্ছে অসংখ্য লাশ। ১৯-২০ ঘণ্টা করে কাজ চলছে একটানা। কেইক্সিন ম্যাগাজিনের রিপোর্ট বলছে, শেষ দু’দিনে অন্তত পাঁচ হাজার কফিন এসেছে সেখানে। ওয়াশিংটন পোস্ট প্রশ্ন তুলেছে, চিনের দেওয়া মৃত্যুর পরিসংখ্যান তাহলে কতটা সত্য?”