
দ্য ওয়াল ব্যুরোঃ এবার কি তবে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হল পাকিস্তানে। অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের জামাইকে গ্রেফতার করতে বাধ্য করার জন্য নাকি অপহরণ করা হয়েছে সিন্ধের পুলিশ প্রধানকে। আর এই অপহরণ নাকি করেছে পাক সেনাবাহিনী। এই অভিযোগ ওঠার পরে অবশ্য তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পাক সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া।
একটি বিবৃতি দিয়ে পাক সেনার তরফে জানানো হয়েছে করাচির সেনা অধিকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই অভিযোগের তদন্ত করতে। বেশ কিছু পাক সংবাদমাধ্যম এই গৃহযুদ্ধের কথা লিখেছে। যেমন দ্য ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ডের তরফে টুইট করে বলা হয়েছে, সিন্ধ পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময়ের পরে করাচিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে। এই লড়াইয়ে করাচি পুলিশের ১০ কর্মী নিহত হয়েছে বলেও দাবি করেছে তারা। অবশ্য ডন-এর তরফে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
সম্প্রতি এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে নওয়াজ শরিফের জামাই মহম্মদ সফদরের গ্রেফতারিকে কেন্দ্র করে। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছে পাকিস্তানের ৯টি বিরোধী দল। তারা দেশজুড়ে ইমরানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেছে। এইরকমই এক বিক্ষোভ কর্মসূচির পরেই গ্রেফতার করা হয় সফদরকে। তিনি ওই কর্মসূচিতে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
গ্রেফতারির পরে অবশ্য জামিন পান সফদর। কিন্তু বিতর্ক শুরু হয় একটি অভিযোগকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ ওঠে, পাক রেঞ্জার্সের চাপে সিন্ধ প্রদেশের পুলিশ প্রধান মুস্তাক মেহের সফদরকে গ্রেফতার করার নির্দেশে সই করেছেন। এই বিষয়ে অবশ্য পাক রেঞ্জার্স বা সফদরের তরফে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু পুলিশ মহলের একটা অংশের তরফে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হয়। তারা বলে, সফদরকে গ্রেফতার করতে রাজি ছিল না পুলিশ। কিন্তু জোর করে তা করানো হয়েছে। এই ঘটনার পরে অনেক পুলিশ আধিকারিক ছুটির আবেদনও করতে চান।
এরপরে মুস্তাক একটি বিবৃতি দিয়ে জানান, তিনিও চেয়েছিলেন ছুটি নিতে, কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত বদল করেছেন। কারণ তিনি চান এই বিষয়ে একটা তদন্ত হোক। অবশ্য তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল কিনা বা জোর করে পাক রেঞ্জার্সের দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কিনা বা জোর করে সই করতে বাধ্য করা হয়েছিল কিনা সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি।
অবশ্য সিন্ধ প্রদেশের পুলিশের তরফে একের পর এক টুইটে জানানো হয়েছে, এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এর ফলে সাধারণ মানুষের পুলিশের উপর থেকে ভরসা উঠে যেতে পারে। এভাবে পুলিশকে জোর করে কোনও কাজ করানো যায় না। এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার জন্য সেনাপ্রধানকে ধন্যবাদ জানিয়েছে পুলিশ।