
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পেনসিলভেনিয়াতে ক্রমেই বেড়ে চলেছে ভোটের ব্যবধান। আর এই প্রদেশ পেয়ে গেলেই ম্যাজিক ফিগার পার হয়ে যাবেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জো বাইডেন। অর্থাৎ হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্পকে সরিয়ে দখল নেবেন তিনি। বাইডেনের মতে জয় নিশ্চিত, ঘোষণা শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পরে নিজের জয়ের ঘোষণা এখনও করেননি বাইডেন। যদিও দেশবাসীর উদ্দেশে এক বার্তা দিলেন তিনি। পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর প্রথম কাজ হল করোনার মোকাবিলা করা। আর তার জন্য বিভেদ ভুলে সবাইকে একজোট হওয়ার বার্তা দিলেন বাইডেন।
বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারের প্রধান অস্ত্র ছিল এই করোনা সংক্রমণ। আমেরিকায় সংক্রমণ মোকাবিলা করতে ট্রাম্প প্রশাসন কতটা ব্যর্থ হয়েছে সেই কথাটাই বারবার তুলে ধরেছেন তিনি। সাধারণ মানুষের মনে এই কথাটা ঢোকাতে পেরেছেন। তারই ফল দেখা যাচ্ছে ভোট ব্যাঙ্কে। আর তাই ঘোষণার আগেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের বার্তা দিয়ে রাখলেন বাইডেন।
আমেরিকায় ফের একবার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। শুক্রবার নতুন করে সংক্রমণের রেকর্ড হয়েছে সেখানে। ১ লাখ ২৭ হাজারের বেশি আক্রান্ত দেখা গিয়েছে। তাই প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরে বাইডেনের সামনেও প্রধান সমস্যা হবে এই কোভিড। আর তাই আগে থেকেই বাইডেন জানিয়ে দিলেন, ক্ষমতায় এসে তাঁর প্রধান কাজ হবে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা।
নিজের হোমটাউন ডেলাওয়্যারের উইলমিংটনে এক জনসভায় এই বার্তা দেন বাইডেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস। বাইডেন বলেন, “আমাদের রাগ, দ্বেষ পিছনে ফেলে এগিয়ে আসতে হবে। এবার সময় হয়েছে দেশ হিসেবে আমাদের একজোট হয়ে লড়াই করার। প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার দায়িত্ব হল গোটা দেশের প্রতিনিধিত্ব করা। আমি সবাইকে বলতে চাই প্রথম দিন থেকে ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করার কাজ শুরু হবে। যে প্রাণগুলি চলে গিয়েছে সেগুলি হয়তো ফিরিয়ে আনতে পারব না। কিন্তু এই কাজের মাধ্যমে আগামী দিনে অনেক প্রাণ বাঁচবে।”

এখনও পর্যন্ত বাইডেনের দখলে রয়েছে ২৫৩টি ইলেকটোরাল ভোট। অন্যদিকে ট্রাম্পের দখলে ২১৪টি ইলেকটোরাল ভোট। সব চোখ রয়েছে পেনসিলভেনিয়ার দিকে। এই প্রদেশে ২৯ হাজার ভোটে ট্রাম্পের থেকে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। অর্থাৎ পেনসিলভেনিয়ার ২০টি ইলেকটোরাল ভোট পেলেই বাইডেনের ২৭৩টি ইলেকটোরাল ভোট হয়ে যাবে। তাহলেই ভোটে জিতে যাবেন তিনি।
অবশ্য শুধুমাত্র পেনসিলভেনিয়া নয়, এখনও ফল ঘোষণা বাকি থাকা প্রদেশগুলির মধ্যে জর্জিয়া, অ্যারিজোনা ও নেভাদাতেও সামান্য এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। মোট ১৪ কোটি ৭০ লাখ ভোটের মধ্যে ট্রাম্পের থেকে প্রায় ৪১ লাখ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে মার্কিন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন। কিন্তু পেনসিলভেনিয়া, জর্জিয়া, অ্যারিজোনা ও নেভাডাতে তাঁর এগিয়ে থাকার মার্জিন অনেকটাই কম।
ছবিটা পরিষ্কার হতেই একের পর এক অভিযোগ তুলছেন ট্রাম্প। কখনও ভোট চুরি, কখনও নতুন করে গণনার দাবি তোলা হচ্ছে। তার মাঝেই এবার বাইডেনকে কটাক্ষ করে ট্রাম্প বলেন, প্রেসিডেন্ট হওয়ার মিথ্যে দাবি করবেন না। ট্রাম্প টুইট করে বলেন, “জো বাইডেনের উচিত নয় প্রেসিডেন্ট হওয়ার মিথ্যে দাবি করা। আমিও এই দাবি করতে পারি।” তাই হয়তো নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা না করলেও পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের প্রথম কাজের কথা দেশবাসীকে বলে রাখলেন বাইডেন।