
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেওয়াল লিখনটা প্রায় পরিষ্কার। পেনসিলভেনিয়া জিতলেই হোয়াইট হাউসের দখল নেবেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জো বাইডেন। সেইসঙ্গে এক দফা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকার পরেই সরতে হবে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। আর এই ছবিটা পরিষ্কার হতেই একের পর এক অভিযোগ তুলছেন ট্রাম্প। কখনও ভোট চুরি, কখনও নতুন করে গণনার দাবি তোলা হচ্ছে। তার মাঝেই এবার বাইডেনকে কটাক্ষ করলেন ট্রাম্প। বললেন, প্রেসিডেন্ট হওয়ার মিথ্যে দাবি করবেন না।
ট্রাম্প টুইট করে বলেন, “জো বাইডেনের উচিত নয় প্রেসিডেন্ট হওয়ার মিথ্যে দাবি করা। আমিও এই দাবি করতে পারি।” শুধু তাই নয়, আরও একটি টুইটে ভোট চুরির অভিযোগও করেছেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, “অনেক বড় লিড ছিল। কিন্তু পরে হঠাৎ করে সেই লিড উধাও হয়ে গেল।”
এই অবস্থায় শনিবার নিজের হোমটাউন উইলমিংটনে বক্তব্য রাখার কথা বাইডেনের। মনে করা হচ্ছে সেখানেই হয়তো নিজের জয়ের ঘোষণা করবেন তিনি। কিন্তু এখনও মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলি সরকারিভাবে জয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। তাই হয়তো নিজের পরিকল্পনায় কিছু বদল আনতে পারেন বাইডেন।
এখনও পর্যন্ত বাইডেনের দখলে রয়েছে ২৫৩টি ইলেকটোরাল ভোট। অন্যদিকে ট্রাম্পের দখলে ২১৪টি ইলেকটোরাল ভোট। সব চোখ রয়েছে পেনসিলভেনিয়ার দিকে। এই প্রদেশে ২০ হাজার ভোটে ট্রাম্পের থেকে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। অর্থাৎ পেনসিলভেনিয়ার ২০টি ইলেকটোরাল ভোট পেলেই বাইডেনের ২৭৩টি ইলেকটোরাল ভোট হয়ে যাবে। তাহলেই ভোটে জিতে যাবেন তিনি।

অবশ্য শুধুমাত্র পেনসিলভেনিয়া নয়, এখনও ফল ঘোষণা বাকি থাকা প্রদেশগুলির মধ্যে জর্জিয়া, অ্যারিজোনা ও নেভাদাতেও সামান্য এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। মোট ১৪ কোটি ৭০ লাখ ভোটের মধ্যে ট্রাম্পের থেকে প্রায় ৪১ লাখ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে মার্কিন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন। কিন্তু পেনসিলভেনিয়া, জর্জিয়া, অ্যারিজোনা ও নেভাডাতে তাঁর এগিয়ে থাকার মার্জিন অনেকটাই কম। জর্জিয়াতে মাত্র ৩৯৭৪ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন তিনি।
পেনসিলভেনিয়াতে বাইডেন এগিয়ে যেতেই পথে নেমেছেন ডেমোক্র্যাট সমর্থকরা। যেখানে ভোট গণনা হচ্ছে তার বাইরে হলুদ টি-শার্ট পরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁরা। তাতে লেখা ‘প্রতিটি ভোট গুণতে হবে’। অন্যদিকে ডেট্রয়েটে ট্রাম্পের সমর্থকরা রাস্তায় নামেন। তাঁদের অনেকের হাতেই অস্ত্র ছিল। ভোটগণনা কেন্দ্রের বাইরে গিয়ে তাঁরা চিৎকার করে বলতে থাকেন ‘লড়াই’। সেইসঙ্গে ‘ভোট চুরি বন্ধ করুন’ স্লোগানও দেন তাঁরা।
বাইডেন জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছতেই ট্রাম্পের শিবির থেকে দাবি করা হয়েছে, উইসকনসিনের ভোট ফের গুণতে হবে। মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও জর্জিয়াতে গণনা বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে আদালতের কাছে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই ট্রাম্প হুমকি দিচ্ছিলেন, ভোটের লড়াই শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াইয়ের রূপ নিতে পারে। সুতরাং সকলেই ধরে নিয়েছিলেন, পরাজয়ের সম্ভাবনা দেখলেই তিনি কোর্টে যাবেন। তবে আমেরিকার সংবাদ মাধ্যম ট্রাম্পের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাতে অবশ্য দমার পাত্র নন তিনি। একের পর এক অভিযোগ করেই চলেছেন ট্রাম্প।