শেষ আপডেট: 24th April 2023 16:34
ক'দিন আগের ঘটনা। পার্ক সার্কাসে ইফতার পার্টির সময়ে দেখা যায় এক নাটকীয় ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীরা অনেকে দাবি করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) চৌরঙ্গীর বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় (Nayana Banerjee) প্রণাম করতে গেলে উনি পা সরিয়ে নেন। কেন পা সরিয়ে নেন মমতা বা কী বলেন নয়নাকে তা স্পষ্ট করে শোনা যায়নি। তবে দেখা যায়, এর পরই হাউহাউ করে কান্না জুড়ে দিয়েছেন চৌরঙ্গীর বিধায়ক। নয়নার দু’নয়ন দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। পরদিন একাধিক সংবাদমাধ্যমে এই মর্মে খবর বেরোয় যে, মমতা নয়নাকে ভর্ৎসনা করেছেন।
এর একদিন পর নয়না আবার ফেসবুকে একটি চিঠি (Letter) করেন। তাঁকে উদ্দেশ করে সেই চিঠি লিখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে লেখা ছিল, ‘মিথ্যা সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তুই মানুষের কাজ করে যা। আর ভাল থাকিস।’ এ পর্যন্ত হলেও বিতর্ক হয়তো থেমে যেত। দেখা যায়, অচিরে চৌরঙ্গী সহ উত্তর কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ওই চিঠির কপি দিয়ে হোর্ডিং-ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। বিশাল বড় বড় সেই সব হোর্ডিং। তার তলায় লেখা, সৌজন্যে: ‘চৌরঙ্গী বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কর্মিবৃন্দ’। কেবল তাই নয়, ওই চিঠির প্রতিলিপি লিফলেট করে বাড়ি বাড়ি দেওয়া হয়।
চৌরঙ্গী এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বামী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার চিঠিকে হোর্ডিং করে ঝোলানোয় উত্তর কলকাতায় তৃণমূলের অন্দরে তীব্র প্রতিক্রিয়া হতে শুরু করে। দলের এক প্রবীণ নেতা ঘরোয়া আলোচনায় বলেন, এ আবার কেমন ব্যাপার। চৌরঙ্গীতে তৃণমূলের ছেলেরা হোর্ডিং ঝোলাল আর সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানতেন না, এটা তো হতে পারে না। এটা কোনও সুস্থ রুচির পরিচয় নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের কোনও বিধায়ক বা সাংসদ কিংবা মন্ত্রীকে চিঠি লিখলে তার গোপনীয়তা রক্ষা করা উচিত। এভাবে তা হাটখোলা করা ঠিক হয়নি। তৃণমূলের রাজ্য নেতাদের মধ্যেও অনেকে এ নিয়ে অসন্তুষ্ট বলে খবর। এর পরই দেখা যায়, হোর্ডিংগুলো টেনে খোলানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত থেকে সরতে পারে শিক্ষক নিয়োগ মামলা, স্পষ্ট ইঙ্গিত সুপ্রিম কোর্টের
ইফতার পার্টির পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যে প্রতিবেদন বেরিয়েছিল, তাতে লেখা ছিল নয়নার কিছু কাজকর্মে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুশি নয়। জোড়াফুলের উত্তর কলকাতার এক নেতা দ্য ওয়ালকে বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়নাকে কী বলেছিলেন, জানি না। তবে নয়নাকে কিছু বলা মানে তা সুদীপকে বলা বলেই ধরে নেওয়া যায়। কারণ, নয়না চৌরঙ্গীর বিধায়ক আর সুদীপ উত্তর কলকাতার সাংসদ। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী।'
তৃণমূলের শীর্ষ সূত্রে খবর, এ নিয়ে খবর বেরোনোর পর সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করেছিলেন মমতাকে। দিদিকে ফোন করেছিলেন নয়নাও। তার পর মমতা ওই চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু সেই চিঠি হোর্ডিং করে ঝোলানো হয়েছে দেখে কালীঘাটও অসন্তুষ্ট বলে খবর। তার পরই হোর্ডিংগুলো টেনে খোলানো হয়েছে।
নীতীশ আর আমার কোনও ইগো নেই, আমরা চাই বিজেপিকে হারাতে: নবান্নে মমতা