
দ্য ওয়াল ব্যুরো : জিএসটি-র ক্ষতিপূরণ কীভাবে দেওয়া হবে, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে একমত হতে পারছে না বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি। বিষয়টি নিয়ে সাত দিনের মধ্যে দু’বার জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক হয়েছে। দ্বিতীয় দফার বৈঠক ছিল সোমবার। এদিন রাতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানান, এখনও কয়েকটি রাজ্যের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। খুব শীঘ্র জিএসটি কাউন্সিলের তৃতীয় বৈঠক ডাকা হবে।
সোমবারের বৈঠকের শেষে ১২ টি রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব মেনে নেয়। তারা জানায়, জিএসটি-র ক্ষতিপূরণের ঘাটতি মেটাতে নিজেরাই বাজার থেকে ঋণ নেবে। কিন্তু অপর ন’টি রাজ্য দাবি করে, কেন্দ্রীয় সরকার নিজেই ঋণ নিক। মূলত বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব মেনে নিয়েছে।
২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে দেশে জিএসটি চালু হয়। এই সংক্রান্ত আইনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, জিএসটি চালুর জন্য রাজ্যগুলির রাজস্ব আদায় কমবে। রাজস্ব আদায় যদি ১৪ শতাংশের বেশি কমে, তাহলে ২০২২ সাল পর্যন্ত তাদের ক্ষতিপূরণ দেবে কেন্দ্রীয় সরকার।
গত ২৭ অগাস্ট জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে ক্ষতিপূরণ নিয়ে রাজ্যগুলিকে দু’টি সুযোগ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। রাজস্ব সচিব জানান, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে আলোচনা করে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাজ্যগুলিকে কম সুদে ৯৭ হাজার কোটি টাকা ধার দেওয়া হবে। ২০২২ সালের মধ্যে সেই ঋণ শোধ করতে হবে। সেস বসিয়ে ঋণশোধের অর্থ সংগ্রহ করবে রাজ্যগুলি। অথবা রাজ্যগুলি পুরো ২ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকাই ঋণ নিতে পারবে। কোন রাজ্য কত টাকা ঋণ নেবে, তা জানাতে হবে আগামী সাত দিনের মধ্যে।
বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির দাবি, গত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় সরকার ক্ষতিপূরণ সেস বাবদ যত টাকা আদায় করেছে, তার পুরোটাই রাজ্যগুলিকে দেওয়া হোক। তাদের হিসাবমতো এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরে আদায় হওয়া কমপেনসেশন সেসের পরিমাণ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এই অর্থ পেলে তবে রাজ্যগুলি অতিমহামারীর সময় তাদের খরচ চালাতে সমর্থ হবে।
ইতিমধ্যে কমপেনসেশন সেস বাবদ রাজ্যগুলিকে ২০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০২১ সালের আর্থিক বছরে এই প্রথমবার রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। ছত্তিসগড়ের বাণিজ্যিক কর মন্ত্রী টি এস সিং দেও বলেন, অগাস্ট মাস অবধি জিএসটি-র ক্ষতিপূরণ বাবদ আদায় হয়েছিল ২৯ হাজার কোটি টাকা। সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওই অর্থের পরিমাণ দাঁড়াবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। তাঁর দাবি, ইন্টিগ্রেটেড গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স বাবদ আদায় করা অর্থ থেকে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলিকে দিক ১১ হাজার কোটি টাকা। পাঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী মনপ্রীত বাদল এই দাবি সমর্থন করে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যেন সেস বাবদ সংগৃহীত অর্থ নিজের কাছে না রাখে।