
দ্য ওয়াল ব্যুরো : গত মাসে ভীমা কোরেগাঁও মামলায় ৮৩ বছর বয়সী স্ট্যান স্বামীকে গ্রেফতার করে এনআইএ। তিনি পার্কিনসনস রোগে ভুগছেন। হাতে গ্লাস বা কাপ ধরতে পারেন না। স্ট্র ও সিপারের সাহায্যে যে কোনও তরল পান করেন। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, এনআইএ গ্রেফতার করার সময় তাঁর স্ট্র ও সিপার কেড়ে নিয়েছে। জেলে সেগুলি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনের জবাব দেওয়ার জন্য আদালত এনআইএ-কে ২০ দিন সময় দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার এনআইএ পুনের স্পেশাল কোর্টে জানাল, তাঁরা স্ট্যান স্বামীর স্ট্র ও সিপার কেড়ে নেয়নি। সুতরাং তাঁকে ওই জিনিসগুলি ফিরিয়ে দেওয়ার প্রশ্নই নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এনআইএ অফিসার এদিন জানান, তাঁদের সংস্থা কখনও তাঁকে কাস্টডিতে নেয়নি। গ্রেফতারের পরে তাঁকে সরাসরি জেলে পাঠানো হয়েছিল। সুতরাং তিনি যদি স্ট্র ও সিপার পেতে চান, তাঁকে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার স্ট্যান স্বামী নতুন করে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে স্ট্র ও সিপারের জন্য আবেদন করেছেন। স্পেশাল কোর্ট জেল কর্তৃপক্ষকে তাদের মতামত জানাতে বলেছে। এই নিয়ে শুনানি মুলতবি রাখা হয়েছে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
গত ৮ অক্টোবর স্ট্যান স্বামী গ্রেফতার হন। ৬ নভেম্বর তিনি স্ট্র ও সিপারের জন্য আবেদন করেন। গ্রেফতারের পর তাঁকে তালোজা সেন্ট্রাল জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এখন তিনি জেল হাসপাতালে আছেন। স্বাস্থ্যের কারণে তিনি জামিন চেয়েছিলেন। গত মাসে বিশেষ এনআইএ কোর্ট তাঁর জামিন নাকচ করে দেয়। তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে মামলা করা হয়েছে।
জেসুইট ধর্মপ্রচারক ফাদার স্টান স্বামী দীর্ঘকাল আদিবাসীদের মধ্যে কাজ করছেন। এনআইএ-র বক্তব্য, স্টান স্বামী নিষিদ্ধ ঘোষিত সিপিআই মাওবাদীর সঙ্গে যুক্ত। তিনি মাওবাদীদের হয়ে অর্থ সংগ্রহ করেন। এনআইএ-র দাবি, স্টান স্বামীর বাড়ি থেকে সিপিআই মাওবাদী দলের নথিপত্র পাওয়া গিয়েছে। ভীমা কোরেগাঁও মামলার অন্যান্য অভিযুক্তের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল।
২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পুনের একটি সভাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। তার ফলে মহারাষ্ট্রের ভীমা কোরেগাঁও অঞ্চলে একজনের মৃত্যু হয়। সেই মামলায় শুক্রবার আটজনের নামে চার্জশিট দিয়েছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। তাঁদের মধ্যে আছেন সমাজকর্মী আনন্দ তেলতুম্বদে, গৌতম নওলাখা এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হানি বাবু। এছাড়া সমাজকর্মী সাগর গোরখে, রমেশ গাইচর, জ্যোতি জগতাপ, স্ট্যান স্বামী এবং মাওবাদী নেতা মিলিন্দ তেলতুম্বদের নামও আছে চার্জশিটে।
তদন্তকারীদের অভিযোগ, এলগার পরিষদের বৈঠকে বুদ্ধিজীবীরা উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছিলেন। তা থেকেই অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। একইসঙ্গে এনআইএ জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যার ষড়যন্ত্রেও জড়িত ছিলেন ধৃত বুদ্ধিজীবীরা।
এর আগে পুনে পুলিশ ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর কোরাগাঁও-ভীমা মামলায় একটি চার্জশিট দাখিল করে। ২০১৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তারা পেশ করে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট। চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি থেকে তদন্ত শুরু করে এনআইএ।