
দ্য ওয়াল ব্যুরো : গোয়েন্দারা খবর দিয়েছিলেন, হাথরাসে দলিত তরুণীর মৃত্যু নিয়ে বিরাট গন্ডগোল হতে পারে। আইন-শৃঙ্খলার বড় ধরনের সমস্যা এড়ানোর জন্যই তরুণীর দেহ রাতে দাহ করা হয়েছিল। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এমনই জানাল উত্তরপ্রদেশ সরকার। শীর্ষ আদালতে হলফনামা দিয়ে যোগী আদিত্যনাথ সরকার জানিয়েছে, যেদিন রাত আড়াইটেয় তরুণীর দেহ দাহ করা হয়েছিল, তার একদিন বাদেই ছিল বাবরি মসজিদ নিয়ে মামলার রায়। সেজন্য হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল। তড়িঘড়ি তরুণীর মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার সেটাও একটা কারণ।
হলফনামায় বলা হয়েছে, “হাথরাস জেলা প্রশাসন ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে নানা সূত্রে খবর পাচ্ছিল, সফদরগঞ্জ হাসপাতালের সামনে যে ধরনা শুরু হয়েছে, তা থেকে অশান্তি ছড়াতে পারে। পুরো ব্যাপারটা হয়তো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা অথবা জাতিদাঙ্গার রূপ নেবে।” প্রশাসনের কাছে নির্দিষ্ট খবর ছিল, পরদিন সকালে নির্যাতিতার গ্রামে কয়েক লক্ষ মানুষ জড়ো হবে। তাদের মধ্যে বিভিন্ন সম্প্রদায় ও জাতপাতের মানুষ থাকবে। মিডিয়াও থাকবে। এই জমায়েত থেকে বড় ধরনের হিংসা শুরু হতে পারে। এছাড়া বাবরি মসজিদ নিয়ে রায় বেরোনর আগে হাই অ্যালার্ট জারি করা ছিল। করোনা সংক্রমণ যাতে না বাড়ে সেজন্যও সতর্ক হওয়া দরকার ছিল।
পরে বলা হয়েছে, “এমন অস্বাভাবিক ও আপৎকালীন সময়ে জেলা প্রশাসন স্থির করে, তরুণীর বাবা-মাকে বুঝিয়ে রাতেই মৃতদেহের সৎকার করা হবে। যাবতীয় ধর্মীয় বিধি মেনেই মৃতের পারলৌকিক ক্রিয়া করা হয়েছে। পরদিন সকালে যাতে বড় আকারের জমায়েত হতে না পারে, সেজন্যই রাতে মৃতদেহ দাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পিছনে কোনও খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না।”
হলফনামায় অভিযোগ করা হয়েছে, কায়েমি স্বার্থবাহী মহল থেকে মিথ্যা খবর ছড়ানো হচ্ছে। তরুণীর মৃত্যু নিয়ে তদন্ত করার জন্য ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে বিশেষ টিম। তাছাড়া রাজ্য সরকার সিবিআই তদন্তেরও সুপারিশ করেছে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে ওই দলিত তরুণীকে চার উচ্চবর্ণের ব্যক্তি ধর্ষণ করে। ধর্ষিতার পরিবারের দাবি, তাঁরা দলিত হওয়ার জন্যই পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেরি করেছিল। গণধর্ষণের পরে তরুণীর ওপরে বীভৎস অত্যাচার করে অপরাধীরা। তাঁর শরীরে নানা জায়গায় হাড় ভেঙে যায়। সারা শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়। ঘাড়ে গভীর ক্ষত থাকার জন্য তাঁর নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। পুলিশ জানায়, তরুণীর জিভেও ক্ষত ছিল। চার অপরাধী যখন তাঁকে গলা টিপে মারার চেষ্টা করছিল, তখন তিনি নিজের জিভ কামড়ে ফেলেন।