
দ্য ওয়াল ব্যুরো : চিন ও পাকিস্তান সীমান্তে যাতে ভারতীয় সেনা সহজে চলাচল করতে পারে সেজন্য বানানো হয়েছে ৪৪ টি সেতু। সোমবার সেতুগুলির উদ্বোধন করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সীমান্তে অশান্তি করার জন্য যৌথভাবে চেষ্টা করছে পাকিস্তান ও চিন। তাঁর কথায়, “আপনারা সকলেই জানেন, আমাদের উত্তর ও পূর্ব সীমান্তে এখন কী অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমে পাকিস্তান, তারপর চিন, দুই দেশই সীমান্তে গোলমাল পাকিয়ে চলেছে। মনে হচ্ছে অশান্তি সৃষ্টি করাই তাদের উদ্দেশ্য। এই দেশগুলির সঙ্গে আমাদের ৭ হাজার কিলোমিটার সীমান্ত আছে। সেখানে উত্তেজনা রয়েছে।”
এদিন রাজনাথ যে সেতুগুলির উদ্বোধন করেন সেগুলি তৈরি হয়েছে লাদাখ, জম্মু ও কাশ্মীর, অরুণাচল প্রদেশ, সিকিম, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও পাঞ্জাবে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিচক্ষণ নেতৃত্বে ভারত সীমান্তে সংকটের মোকাবিলা করছে কড়া হাতে। সেই সঙ্গে দেশে অনেক ঐতিহাসিক পরিবর্তন এনেছে।” রাজনাথ সিং এদিন অরুণাচল প্রদেশে নেচিফু টানেলের প্রতীকি উদ্বোধন করেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী দাবি করেন, কেবল সেনাবাহিনী নয়, সাধারণ মানুষও ওই সেতুগুলি তৈরি হওয়ায় লাভবান হবেন।
44 Bridges made by BRO across 7 States/ UTs (J&K-10 Ladakh-8 HP-2 Punjab-4 Uttarakhand-8 Arunachal-8 Sikkim-4) will be dedicated to the Nation by Raksha Mantri Shri @rajnathsingh in a short while from now. pic.twitter.com/zZZW3aTIsR
— रक्षा मंत्री कार्यालय/ RMO India (@DefenceMinIndia) October 12, 2020
চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত বিরোধ যখন তুঙ্গে তখনই ৪৪ টি সেতু সেনাবাহিনীর চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হল। গত মে মাস থেকেই লাদাখ সীমান্তে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। ভারতীয় সেনার সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয় ১৫ জুন। ২০ জন ভারতীয় সৈনিক নিহত হন। এর পরে সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে চিনের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা চালায় ভারত। কিন্তু তার পরেও চিনারা ভারতের জমি দখল করার চেষ্টা চালাতে থাকে।
সেপ্টেম্বরের শুরুতে দক্ষিণ প্যাঙ্গং হ্রদের উঁচু পাহাড়ি এলাকা কবজা করার চেষ্টা করে চিনের বাহিনী। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকা চুমার এলাকাকেও তারা টার্গেট করে। চিনের সে উদ্দেশ্য প্রতিহত করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। কিন্তু উত্তাপের আঁচ যেভাবে বাড়ছে তাতে দু’পক্ষই পরস্পরের মুখোমুখি নিজেদের ট্যাঙ্ক সাজিয়ে বসেছে। একে অপরের দিকে নিশানা স্থির করে আছে ট্যাঙ্কবাহিনী।
প্যাঙ্গং লেকের উত্তর ভাগে রয়েছে কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি। দক্ষিণ ভাগে নানা বিক্ষিপ্ত এবড়ো খেবড়ো পাহাড়। প্যাঙ্গং সো রেঞ্জেই রয়েছে পাহাড়ি খাঁজ বা ফিঙ্গার এলাকা যেগুলিতে জবরদখল করে বসে আছে চিনের সেনা। ভারতীয় সেনা সূত্র জানাচ্ছে, প্যাঙ্গং হ্রদ ও তার আশপাশের পাহাড়ি খাঁজ মিলিয়ে ৬০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিস্তৃত। দক্ষিণ ভাগের যে উঁচু পাহাড়ি এলাকা দখলের চেষ্টা করেছিল লাল ফৌজ সেটা ছিল ‘কালা টপ’ । প্যাঙ্গং রেঞ্জের সবুজ উপত্যকা বা গ্রিন টপে ইতিমধ্যেই ঢুকে পড়েছে চিন। এবার কালা টপে জমি দখলের চেষ্টায় ছিল তারা। ভারতীয় সেনার তৎপরতায় তা রুখে দেওয়া গিয়েছে। কালা টপে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করেছে ভারতের বাহিনী।