
দ্য ওয়াল ব্যুরো : গত কয়েক মাসে বিপুল বিনিয়োগ হয়েছে ভারতের শেয়ার বাজারে। তার ফলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় টাকা। গতবছর টাকা ছিল এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রা। বর্তমানে টাকার দামই বাড়ছে সবচেয়ে বেশি। এবছর ডলারের প্রেক্ষিতে টাকার দাম বেড়েছে ০.৬ শতাংশ। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, আগামী দিনেও টাকার দামের উর্ধ্বগতি বজায় থাকবে।
ভারতের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ দু’টি। প্রথমত লকডাউন শিথিল হওয়ার পর থেকেই ভারতের অর্থনীতি ক্রমশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। দ্বিতীয়ত এবারের বাজেটেও অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তার ফলে চলতি মাসেই ভারতের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ হয়েছে ৪০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা। চিনের পরে ভারতের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। টাকার দাম যাতে বেশি না কমে, সেজন্য একসময় হস্তক্ষেপ করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু এখন তার প্রয়োজন হচ্ছে না।
গত সপ্তাহে এক ডলারের দাম ছিল ৭২ টাকা ৫৭ পয়সা। আগামী শুক্রবারের পর টাকার দাম আরও বাড়তে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। ওইদিন আর্থিক বিকাশ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশিত হবে। অনেকের ধারণা, তখনই দেখা যাবে, মন্দার পর্ব পেরিয়ে এসেছে ভারত। বরং অর্থনীতির বিকাশ হয়েছে ০.০৫ শতাংশ।
টাকার দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য গতবছর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ডলার কিনতে শুরু করে। ২০২০ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক কিনেছিল ১২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। ওই অর্থের পরিমাণ ভারতের মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি)-র চার শতাংশ। গত মাসে রিজার্ভ ব্যঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানান, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আগামী দিনেও ডলার কিনবে।

সিঙ্গাপুরের সাউথ এশিয়া এফ এক্স রিসার্চ অ্যাট স্ট্যান্ডার্ড চ্যাটার্ড ব্যাঙ্কের প্রধান দিব্যা শেঠ জানান, “স্বল্পমেয়াদে ভারতীয় মুদ্রার দাম বাড়ছে। কিন্তু মাঝারি মেয়াদে কী হবে এখনই বলা যায় না। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তে পারে। বাড়তে পারে বাণিজ্য ঘাটতি। তখন ফের কমতে পারে টাকার দাম।”
গত বছর করোনা অতিমহামারীর ফলে দেশের অর্থনীতি একসময় প্রায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। মার্চের শেষদিক থেকে দেশ জুড়ে চালু হয়েছিল লকডাউন। লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছিলেন। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, “সেই অন্ধকারের মধ্যে একমাত্র রুপোলি রেখা ছিল কৃষি। অতিমহামারীর ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল পরিষেবা, ম্যানুফ্যাকচারিং এবং গৃহ নির্মাণশিল্প।”