
দ্য ওয়াল ব্যুরো : সোমবার সকালেই শোনা গিয়েছিল, রাজস্থানের বিদ্রোহী কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলটের সঙ্গে দেখা করতে পারেন দলের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী। বিকালে জানা যায়, দিল্লিতে রাহুলের বাড়িতে গিয়েছেন শচীন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও। তিনজন প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করেন। রাহুল আশ্বাস দেন, যে বিষয়গুলিতে প্রতিবাদ জানিয়ে শচীন বিদ্রোহ করেছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। শচীন বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলোটের ‘কাজের পদ্ধতি’ তাঁর পছন্দ নয়। রাহুল এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
রাহুলের সঙ্গে দেখা করার পরে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এতদিনে ঘরে ফিরলেন শচীন। গত মাসে তিনি বিদ্রোহ করার পরে রাজস্থানে কংগ্রেস সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। শচীনের সঙ্গে কংগ্রেসের আরও ১৮ জন বিধায়ক বিদ্রোহ করেছিলেন। এদিন তাঁরাও ‘ঘরে ফিরলেন’ বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা।
এদিন রাহুল জানিয়েছেন, শচীনের অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার জন্য একটি প্যানেল তৈরি করবে দল। ‘ঘর ওয়াপসি’-র ফর্মুলা অনুযায়ী শচীনকে সম্ভবত রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রী ও প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির পদটি ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অশোক গেহলোটকে সরানোর ‘প্রশ্নই আসে না’ বলে জানিয়েছেন রাহুল।
দু’সপ্তাহ আগে প্রিয়ঙ্কা ফোনে শচীনের সঙ্গে কথা বলেন। তারপরে দু’জনের বৈঠক হয়। শচীন বলেন, আগামী দিনে তিনি রাজস্থানে থেকেই রাজনীতি করতে চান। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে তিন আশ্বাস চান, কংগ্রেসে তাঁর ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত থাকবে। প্রিয়ঙ্কা তাঁকে কোনও কথা দেননি। পরে কংগ্রেসের অপর দুই প্রথম সারির নেতা আহমেদ প্যাটেল ও কে সি বেণুগোপালের সঙ্গে শচীন কথা বলেন। তিনজনের সঙ্গে শচীনের কী কথা হয়েছে সব রাহুলকে জানানো হয়। তখন তিনি রাজস্থানের বিদ্রোহী নেতার সঙ্গে বৈঠকে রাজি হন।
রবিবারই রাজস্থান কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নেয়, যাঁরা দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে না। এদিন মরুশহর জয়সলমিরে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বৈঠক বসে। সেখানে নগরোন্নয়ন ও আবাসন মন্ত্রী শান্তি ধারিওয়াল বলেন, যারা দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তাদের আর কখনই ফিরিয়ে নেওয়া উচিত নয়। অপর বিধায়করা একবাক্যে তাঁকে সমর্থন করেন। এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক অবিনাশ পাণ্ডে বলেন, কংগ্রেসে বিদ্রোহ নিয়ে ব্যবস্থা নেবে হাইকম্যান্ড। তবে তিনি নিজে চান, বিদ্রোহীদের যেন আর ফেরানো না হয়। কিন্তু সোমবার রাহুলের সঙ্গে বৈঠকের পর স্পষ্ট, শচীন স্বমহিমায় দলে ফিরছেন।
রাজস্থানে বিধানসভার অধিবেশন বসছে ১৪ অগাস্ট। সেখানে সম্ভবত আস্থাভোট নিতে চাইবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তাঁর পক্ষে কতজন বিধায়ক আছেন, তা এতদিন স্পষ্ট হয়নি। শচীনদের ‘ঘর ওয়াপসি’-র পর অনেকেই বলছেন, রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার এযাত্রা টিকে গেল।