
দ্য ওয়াল ব্যুরো : অতীতে বিজেপি বার বার সর্দার বল্লভাভাই পটেলকে ভারত রাষ্ট্রের একতার প্রতীক হিসাবে তুলে ধরেছে। তাঁর বিশাল মূর্তিও স্থাপন করেছে। কিন্তু বুধবার গুজরাতের মোতেরায় সর্দার বল্লভভাই পটেল স্টেডিয়ামের নাম বদলে রাখা হল নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একসময় গুজরাত ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন।
সর্দার পটেল স্টেডিয়াম লোকমুখে মোতেরা স্টেডিয়াম নামে পরিচিত ছিল। ২০১৫ সালে ওই স্টেডিয়াম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর প্রায় নতুন করে গড়ে তোলা হয় সেই স্টেডিয়াম। বুধবার পুনর্নির্মিত স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
পুনর্নির্মিত স্টেডিয়ামের উদ্বোধন উপলক্ষে এদিন আমেদাবাদে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেণ রিজিজু এবং বিসিসিআই-এর সচিব জয় শাহ। এদিনই স্টেডিয়ামে শুরু হবে ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট ম্যাচ। আমেদাবাদে গড়ে তোলা হবে একটি স্পোর্টস এনক্লেভ। তার নাম দেওয়া হবে সর্দার পটেল এনক্লেভ। নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম থাকবে সেই এনক্লেভেরই একটি অংশে।
রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে বলেন, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় নরেন্দ্র মোদী এই স্টেডিয়ামটিকে নতুন করে গড়ে তোলার কথা ভেবেছিলেন। এই স্টেডিয়াম পরিবেশ-বান্ধব উন্নয়নের প্রতীক হয়ে থাকবে। আগামী দিনে আমেদাবাদকে সবাই ভারতের ‘স্পোর্টস সিটি’ বলবে। অমিত শাহ বলেন, এই স্টেডিয়ামে অলিম্পিকসও হতে পারে।
১৯৮২ সালে মোতেরা স্টেডিয়াম তৈরি হয়। তখন সেখানে ৪৯ হাজার দর্শকের বসার জায়গা ছিল। ৬৩ একর জুড়ে ওই স্টেডিয়াম বিস্তৃত। সেখানে রয়েছে একটি ইনডোর ক্রিকেট অ্যাকাডেমি। সেই সঙ্গে ৪০ জন অ্যাথলিটের থাকার মতো ডরমিটরি। স্টেডিয়ামের ড্রেসিং রুম একইসঙ্গে চারটি দল ব্যবহার করতে পারে। এর পাশাপাশি সেখানে রয়েছে অত্যাধুনিক জিমনাসিয়াম, ছ’টি ইনডোর প্র্যাকটিস পিচ এবং তিনটি আউটডোর প্র্যাকটিস ফিল্ড।
বিশ্বের বৃহত্তম স্পোর্টস গ্রাউন্ডগুলির মধ্যে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। এখন সেখানে মেলবোর্ন ক্রিকেট স্টেডিয়াম এবং ইডেন গার্ডেনসের চেয়ে বেশি দর্শক বসতে পারবেন। ইডেন গার্ডেনসে এখন ৬২ হাজারের বেশি দর্শক বসতে পারেন।
১৯৮৩-৮৪ সালে প্রথমবার ওই স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ হয়। সেখানে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১২ সালে সেখানে শেষবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ হয়। সেবারেও ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ইংল্যান্ড। ১৯৮৪-৮৫ সালে সেখানে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া একদিনের ক্রিকেট ম্যাচ হয়। ২০১৪ সালে শেষবারের মতো একদিনের ক্রিকেট হয় ওই মাঠে। সেখানে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা।
এখনও পর্যন্ত ওই স্টেডিয়ামে ৩৫ টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ হয়েছে। তার মধ্যে আছে ১২ টি টেস্ট এবং ২৩ টি একদিনের ম্যাচ ও টি টোয়েন্টি। ১৯৮৭ সালে এই স্টেডিয়ামে টেস্ট ক্রিকেটে ১০ হাজার রান পূর্ণ করেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সুনীল গাভাসকর। ১৯৯৪ সালে আর এক প্রাক্তন অধিনায়ক কপিল দেব এখানে ৪৩২ তম উইকেটটি নেন।