
দ্য ওয়াল ব্যুরো : টুলকিট মামলায় ধৃত পরিবেশকর্মী দিশা রবিকে শনিবার দিল্লি আদালতে পেশ করে পুলিশ। ওই টুলকিটকে পরিবেশকর্মীর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার প্রমাণ হিসাবে দাখিল করা হয়েছে। কিন্তু দিশা বলেন, টুলকিট ছিল একটি রিসোর্স ডকুমেন্ট। অর্থাৎ তার মাধ্যমে কোনও পাঠক কৃষক আন্দোলনের নানা নথির সন্ধান পেতে পারতেন। তিনি জামিনের জন্য আবেদন করেন। দিল্লি পুলিশ সেই আবেদনের বিরোধিতা করে বলে, ওই টুলকিটের মাধ্যমে এমন কয়েকটি সাইটের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল যেখানে ভারত সরকার ও সেনাবাহিনীর নিন্দা করা হয়েছে।
পুলিশের দাবি, ২২ বছর বয়সী ওই পরিবেশকর্মীর সঙ্গে খলিস্তানি সংগঠন পোয়েটিক জাস্টিস ফাউন্ডেশনের যোগযোগ রয়েছে। দিশার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না। জামিন পেলে তিনি প্রমাণপত্র নষ্ট করতে পারেন। পুলিশের কৌঁসুলি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, টুলকিটের অনেক লেখা, ছবি ও ভিডিও মুছে ফেলা হয়েছে। তদন্ত এখনও প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। এই অবস্থায় দিশাকে জামিন দেওয়া ঠিক নয়।
বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা প্রশ্ন তোলেন, কেউ যদি অবাঞ্ছিত ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করে, তাহলেই কি ধরে নেওয়া যায়, তার খারাপ উদ্দেশ্য ছিল? পুলিশের দাবি, এম ও ধালিওয়াল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে দিশার যোগযোগ আছে। তিনি পোয়েটিক জাস্টিস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। অভিযোগ, ধালিওয়াল অতীতে দেশবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন। সেই প্রসঙ্গেই বিচারক ওই প্রশ্ন করেন। পুলিশ বলে, ধালিওয়ালকে সকলেই চেনে। তাঁর সঙ্গে দেখা করার কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে? বিচারক বলেন, আমি জানি না ধালিওয়াল কে?
বিচারক প্রশ্ন তোলেন, দিশা রবিকে কীভাবে ২৬ জানুয়ারির হিংসার জন্য দায়ী করা যায়? পুলিশ বলে, কোনও ষড়যন্ত্রে সকলেরই সমান ভূমিকা থাকে না। ওই টুলকিটের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কেউ হিংসাত্মক কিছু ঘটিয়ে থাকতে পারে। এই উত্তরে সন্তুষ্ট না হয়ে দিল্লি পুলিশের কৌঁসুলি তথা অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলকে বিচারক নির্দেশ দেন, টুলকিটে কী ছিল আদালতে দেখান। কীভাবে তার দ্বারা হিংসায় প্ররোচনা দেওয়া হয়েছিল, তাও ব্যাখ্যা করুন।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বেঙ্গালুরু থেকে দিশা রবিকে গ্রেফতার করা হয়। সরকারের ধারণা, বিদেশি বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির উস্কানিতে প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লিতে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল। দিশা বাদে আরও দু’জনের বিরুদ্ধে হিংসায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন নিকিতা জ্যাকব ও শান্তনু মুলুক।