
নাম বিতর্ক থেকে মুক্ত ‘করোনিল’, সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি পেল পতঞ্জলি
চেন্নাইয়ের এক সংস্থার আর্জি খারিজ করে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, পতঞ্জলি 'করোনিল' ট্রেডমার্ক ব্যবহার করতে পারবে। উল্লেখ্য, চেন্নাইয়ের ওই সংস্থা 'করোনিল' ট্রেডমার্ক তাদের দাবি করে আদালতে গিয়েছিল। সংস্থা বলে ১৯৯৩ সাল থেকে ওই নাম তারা ব্যবহার করছে।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। জন্ম থেকেই যোগগুরু রামদেবের সংস্থা পতঞ্জলির করোনিলের ছায়া সঙ্গী হয়ে রয়েছে বিতর্ক। তবে এবার নাম বিতর্ক থেকে মুক্তি পেল করোনিল। সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি পেল যোগগুরু রামদেবের সংস্থা। চেন্নাইয়ের এক সংস্থার আর্জি খারিজ করে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, পতঞ্জলি ‘করোনিল’ ট্রেডমার্ক ব্যবহার করতে পারবে। উল্লেখ্য, চেন্নাইয়ের ওই সংস্থা ‘করোনিল’ ট্রেডমার্ক তাদের দাবি করে আদালতে গিয়েছিল। সংস্থা বলে ১৯৯৩ সাল থেকে ওই নাম তারা ব্যবহার করছে।
আরও পড়ুন
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা নিতেই হবে, ইউজিসির নির্দেশিকা বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট
চেন্নাইয়ের আরুদ্রা ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড ওই মামলা করেছিল। ভারী যন্ত্র আর কনটেনমেন্ট ইউনিটের রাসায়নিক এবং স্যানিটাইজার নির্মাণকারী ওই সংস্থার বক্তব্য ছিল, তারা ১৯৯৩ সালে করোনিল-২১৩ এসপিএল ও করোনিল-৯২বি এই দু’টি ট্রেডমার্ক রেজিস্টার করায়। সেই সময় থেকে নিয়ম মেনে ট্রেডমার্ক নিয়মিত পুনর্নবীকরণও করা হয়েছে। ২০২৭ সাল পর্যন্ত এই ট্রেডমার্ক তাদের।
প্রথমে মাদ্রাজ হাইকোর্টে মামলা করে ওই সংস্থা। অভিযোগ শুনে মাদ্রাজ হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ পতঞ্জলিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে। একই সঙ্গে ‘করোনিল’ ট্রেডমার্ক ব্যবহারের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে। তবে মাদ্রাজ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে পতঞ্জলিকে ‘করোনিল’ ট্রেডমার্ক ব্যবহারের অনুমতি দেয়। এরপরই সুপ্রিম কোর্টে যায় আরুদ্রা ইঞ্জিনিয়ারিং। সেখান থেকেও স্বস্তি পেল পতঞ্জলি। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বে শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ জানিয়েছে, একই নামে একটি রাসায়নিক রয়েছে বলে এই মহামারীর সময়ে যদি ‘করোনিল’ নামটি পতঞ্জলিকে ব্যবহার করতে না দেওয়া হয় তবে সেটা মারাত্মক ক্ষতিকর হবে। এই মামলায় সেপ্টেম্বরে মাদ্রাজ হাইকোর্টে শুনানি হবে।
করোনিলকে নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি দেশে। হরিদ্বারে পতঞ্জলির হেড কোয়ার্টারে প্রেস কনফারেন্স করে যোগগুরু বাবা রামদেব যেদিন ঘোষণা করেন যে তাঁরা প্রথম আয়ুর্বেদিক উপাদানে তৈরি করোনার ওষুধ নিয়ে এসেছেন, বিতর্কের শুরু সেদিন থেকেই। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও আষুষ মন্ত্রকের অনুমোদন ছাড়া কীভাবে করোনার প্রতিষেধক বাজারে ছাড়লেন রামদেব সেই নিয়ে শুরু হয় টানাপড়েন। পতঞ্জলিকে আইনি নোটিশও ধরানো হয়। বলা হয়, কোনও ওষুধ বাজারে আনতে হলে আগে তার ফর্মুলা ও ক্লিনিকাল ট্রায়ালের বিস্তারিত রিপোর্ট জমা করতে হয়। কী কী উপাদানে তৈরি হয়েছে সেই ওষুধ, কোন পথে এগিয়েছে গবেষণা, ল্যাবরেটরিতে তার সেফটি ট্রায়াল ও মানুষের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফল কী, লাইসেন্সের জন্য অনুমোদন করা হয়েছে কিনা ইত্যাদি তথ্য সবিস্তারে জানিয়ে রিপোর্ট জমা করতে হয়। কিন্তু সেসবের নাকি কিছুই করেনি পতঞ্জলি। তাই এই ওষুধ ব্যবহারে কোনওভাবেই অনুমতি দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
পরে জুলাই মাসের শুরুতে বহু তর্ক-বিতর্কের পরে করোনিলে ছাড়পত্র দিয়েছিল আয়ুষ মন্ত্রক। তবে শর্তে বলা হয়, এটাকে করোনার ওষুধ বলে দাবি করা যাবে না। সংক্রমণ সারাতেও এর প্রয়োগ করা যাবে না। তবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে প্রোফিল্যাক্টিক ড্রাগ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে পতঞ্জলির করোনিল।
তবে সম্প্রতি বাবা রামদেব জানিয়েছেন, বিতর্ক করোনিল প্রচুর বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে এখন প্রতিদিন ১০ লাখ প্যাকেট করোনিলের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আমরা এক লাখ উৎপাদন করতে পারছি।” তিনি আরও বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে আমরা যদি এর দাম ৫ হাজার টাকা রাখতাম তাহলে সহজেই ৫ হাজার কোটি টাকা কামাতে পারতাম। কিন্তু আমরা সেটা করিনি।”