
দ্য ওয়াল ব্যুরো : ২৪ হাজার ৭১৩ কোটি টাকায় ফিউচার গ্রুপের খুচরো ব্যবসা কিনছে রিলায়েন্স। অ্যামাজন এই বিজনেস ডিলে বাধা দিয়েছিল। কিন্তু তাদের আপত্তি না শুনে সেবি রিলায়েন্সকে ফিউচার গ্রুপের সম্পত্তি কিনতে অনুমতি দিয়েছে। তারপরই বৃহস্পতিবার সেনসেক্স পৌঁছাল রেকর্ড উচ্চতায়। দিনের শুরুতেই সেনসেক্স ৩৩৫ পয়েন্ট উঠে পৌঁছে যায় ৫০১২৬.৭৩-এর ঘরে। অপর শেয়ার সূচক নিফটিও ৫০ পয়েন্ট উঠে ১৪৭০০-র ঘরে পৌঁছে যায়।
এশিয়ার অন্যান্য দেশেও এদিন শেয়ার সূচক পৌঁছেছে রেকর্ড উচ্চতায়। আমেরিকায় নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে জো বাইডেন শপথ নেওয়ার পরে বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, শীঘ্রই আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে। করোনা অতিমহামারীর ধাক্কায় বিধ্বস্ত মার্কিন অর্থনীতি তাতে চাঙ্গা হবে। বিনিয়োগকারীদের এই আশার ওপরে ভর করেই উঠতে শুরু করেছে সূচক।
ভারতেও বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার উপার্জন বেড়েছে। আশা করা হচ্ছে বাজেটে বড় ধরনের সংস্কারের কথা ঘোষণা করা হবে। বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও ভারতের বাজারে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। নিফটির অন্তর্ভুক্ত শেয়ারগুলির মধ্যে বাজাজ ফিনান্সের দাম বেড়েছে তিন শতাংশ। এছাড়া টাটা মোটর্স, ইউপিএল, বাজাজ ফিনসার্ভ, ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, এইচসিএল টেকনোলজিস, ইচার মোটর্স, হিরো মোটোকর্প, শ্রী সিমেন্ট, ডক্টর রেড্ডিজ ল্যাব এবং উইপ্রোর শেয়ারের দাম বেড়েছে এক থেকে ৩.৫ শতাংশ।
অন্যদিকে আদানি পোর্টস, টিসিএস, এইচডিএফসি, টাটা স্টিল, গেইল ইন্ডিয়া, জেএসডব্লু স্টিল, ভারত পেট্রলিয়াম এবং এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম কমেছে।
গত ডিসেম্বরে জানা যায়, করোনার ধাক্কা সামলে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ভারতের অর্থনীতি। নভেম্বরের শেষে জানা যায়, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ভারতের মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি) সংকুচিত হয়েছে ৭.৫ শতাংশ হারে। এর আগের ত্রৈমাসিকে জিডিপির সংকোচন হয়েছিল ২৩.৯ শতাংশ। অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন মাসের ত্রৈমাসিকের চেয়ে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে জিডিপি সংকোচনের হার কমেছে। কিন্তু পরপর দু’টি ত্রৈমাসিকে জিডিপি সংকুচিত হওয়ায় ধরে নেওয়া হচ্ছে, মন্দার কবলে পড়েছে ভারতের অর্থনীতি। অর্থনীতিবদরা আশঙ্কা করেছিলেন, চলতি আর্থিক বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে জিডিপির সংকোচন হবে ৮.৮ শতাংশ। বাস্তবে অর্থনীতির অবস্থা অত খারাপ হয়নি।
প্রথম ত্রৈমাসিকে লকডাউনে সব বন্ধ ছিল। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে আনলক পর্ব শুরু হয়। ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কার্যকলাপ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ফলে জিডিপির সংকোচন হয়েছে কম হারে।
অর্থনীতিবিদদের একাংশ মনে করছেন, ডিসেম্বরে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে জিডিপির সংকোচনের হার আরও কমবে। তখন মোট জাতীয় উৎপাদন সংকুচিত হবে তিন শতাংশ। আর্থিক বছরের শেষ ত্রৈমাসিকে জিডিপি সংকুচিত হবে ০.৫ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে ২০২০-২১ সালের আর্থিক বছরে অর্থনীতি সংকুচিত হবে সম্ভবত ৮.৭ শতাংশ। সেক্ষত্রে ধরে নিতে হবে গত চার দশকে চলতি আর্থিক বছরেই সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হয়েছে ভারতীয় অর্থনীতির।