
নন্দীগ্রামে কী হবে? ‘ছেলের অমঙ্গল তো চাইতে পারব না’, নরমে-গরমে শিশির অধিকারী
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জেলা সভাপতি পদ থেকে দল তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পর থেকে চুপচাপই ছিলেন বেশ কিছুদিন। চোখে ছানি অপারেশন হয়েছে। বাড়িতেই থাকছেন বেশিরভাগ সময়ে।
কিন্তু বুধবার হঠাৎই ক্ষোভের জ্বালামুখ খুলে গেল কাঁথির প্রবীণ সাংসদ শিশির অধিকারীর। এমনি এমনি মুখ খোলেননি, সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, মেদিনীপুরে তৃণমূলের প্রার্থী বাছাই নিয়ে। সেই শুরু।
পরে সন্ধ্যায় সাংবাদিকরা এ প্রশ্নও করেন, আচ্ছা নন্দীগ্রামে কী হবে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো প্রার্থী হচ্ছেন। ওমনি গলাখাঁকারি দিয়ে বলেন, “নন্দীগ্রাম বলে একটা জায়গা যে রয়েছে সে তো ভুলেই গেছিল অনেকে। নন্দীগ্রাম বড়ই কঠিন মাটি।” কোনও বিরতি না দিয়েই তিনি বলেন, “আমাদের তো হিন্দু একান্নবর্তী পরিবার। বাপ-ছেলে পাশাপাশি ঘরে থাকি। ছেলের অমঙ্গল তো চাইতে পারব না।”
শুভেন্দু অধিকারী দল ছাড়ার পর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমিয়েছে তৃণমূল। ঠিকাদারদের মাথা থেকে শুরু করে কিছু বলতেই বাকি রাখেনি। এখন শিশিরবাবুর সম্পর্কেও সমালোচনা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের অনেকেই বলছেন, শিশিরবাবু বিজেপিতে পা বাড়িয়ে রেখেছেন। তৃণমূলে তাঁর আর মন নেই।
এদিন সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে কাঁথির পোড় খাওয়া সাংসদ বলেন, “শোনো বাবা, চোখের ছানি কাটিয়েছি। এখন মনে হচ্ছে, আরও অনেক দিন বাঁচব। অনেক কিছু দেখব। কারও নাম করছি না, যাঁরা বড় বড় কথা বলছে, তাঁদের কী হয় তাও দেখব। তবে হ্যাঁ ওসব দল ছাড়াছাড়ি বাজে কথা।”
শিশিরবাবুর কথায়, “দলত্যাগ বিরোধী আইনটা একটু দেখতে হবে। কেউ যদি দল না ছাড়েন, আবার দল তাঁকে যদি বাড়িতে বসে রাখে, তাহলে কী বিধান আছে একবার পড়ে দেখব।”
শুভেন্দুই এর আগে বলেছিলেন, রাম নবমী আসুক, আমার বাড়িতেও পদ্ম ফুটবে। তার পর কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা শুভেন্দুর ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারী ইতিমধ্যে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। শিশিরবাবুর সেজো ছেলে দিব্যেন্দু অধিকারী তমলুকের তৃণমূল সাংসদ। শুভেন্দু দল ছাড়ার পর থেকে দিব্যেন্দুকেও মোটামুটিভাবে হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সহ বিভিন্ন পদ থেকে ছাঁটা হয়েছে।
এদিন শিশিরবাবু বলেন, “আমার এখানে পার্টির মিটিং হচ্ছে শুনছি। দশ বারো জন করে মিটিং। সেখানে লোক জনকে শাসানো হচ্ছে, তাঁদের ফোন নাকি ট্যাপ হচ্ছে, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখলে দেখে নেবে! এই তো অবস্থা।”
এখানেই থামেননি শিশিরবাবু। তিনি বলেন, মেদিনীপুরে ভোটের ফলাফল ঠিক হয়ে গেছে। ওই যে যেদিন এখানে এসে শুভেন্দুর উদ্দেশে বলেছিল, আমি দাঁড়িয়ে আছি, ক্ষমতা থাকলে তোর বাপকে ডেকে নিয়ে আয়। সেদিনই মানুষ চিনে গেছে মেদিনীপুর কাদের হাতে বিপন্ন হতে পারে!”