দ্য ওয়াল ব্যুরো: দু’টি উপজাতি গোষ্ঠীর মানুষদের মধ্যে গুলিযুদ্ধে নিহত অন্তত ৬ জন! মঙ্গলবার ভোরে বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা বান্দরবানের এই ঘটনায় আরও তিন জন জখম হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি তাঁরা।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার জেরিন আক্তার জানিয়েছেন, এমন ঘটনা আগেও হয়েছে। তবে এভাবে প্রাণ যায়নি কারও। জখম তিন জনকে প্রথমে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, যে ৬ জন নিহত হয়েছেন, তাঁরা সকলে উপজাতি গোষ্ঠী জনসংহতি সমিতির সদস্য। এমএন লারমা নামের একটি গ্রুপও আছে তাঁদের। তাঁদের সঙ্গেই সংঘাত বাঁধে বান্দরবানের অন্য কোনও গোষ্ঠীর। সংঘাতে নিহতদের নাম হল প্রজিত চাকমা (৬৫), ডেভিড মারমা (৪৫), জয় ত্রিপুরা (৪০), দীপেন ত্রিপুরা (৪২), রতন তঞ্চঙ্গ্যা (৫৫) ও বিমলকান্তি চাকমা (৬০)। জখম ৩ জন হলেন নিহার চাকমা, বিদ্যুৎ চাকমা ও হ্লাওয়াংসিং। হ্লাওয়াংসিং বান্দরবানের রাজভিলা ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্যের মেয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক স্থানীয় বাসিন্দা সামপ্রুই মারমা জানান, সকালে হঠাৎই বাঘমারা বাজারপাড়ার পশ্চিম দিক থেকে একটি সশস্ত্র গ্রুপ এলাকায় প্রবেশ করে জেএসএস সভাপতির বাড়িতে হামলা চালায়। ওই ঘরেই ছিলেন অন্য সদস্যরা। তাঁদের মধ্যেই ৬ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

এই ঘটনার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমাকে দায়ী করেছে জনসংহতি এমএন লারমা গ্রুপের কিছু সদস্য। তাঁদের দাবি, জনসংহতি সমিতির সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করার জন্য গত এক মাস ধরে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে একটি দল বান্দরবানে কাজ করছিল। সেই দলই আক্রমণের মুখে পড়ল। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বান্দরবানের বিভিন্ন উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে এলাকা দখলের লড়াই প্রায়ই চলে। মাঝেমধ্যেই গুলিও চলে। তবে মঙ্গলবার সকালের ঘটনা সব ছাপিয়ে গেছে। বান্দরবানের বাঘমারা এলাকায় শুরু হয় অশান্তি। তার জেরে প্রাণ গেল ৬ জনের।
ঘটনার পর বাঘমারা বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। আতঙ্কে স্থানীয়রা অনেকেই নিরাপদ জায়গায় চলে গেছেন। ঘটনাস্থলে এখন সেনাবাহিনী এবং পুলিশ মোতায়েন রয়েছেন।