
প্রধানমন্ত্রীর বিশ লাখ কোটির প্যাকেজ হাস্যস্পদ, গরিবের জন্য কোনও মায়াদয়া নেই, বিরোধী বৈঠকে সনিয়া
করোনা সংকটের পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার সমস্ত বিরোধী দলের নেতাদের ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বৈঠকে ডেকেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘোষণা করা কুড়ি লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ নিয়ে ওই বৈঠকে তীব্র সমালোচনা করলেন তিনি।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনা সংকটের পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার সমস্ত বিরোধী দলের নেতাদের ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বৈঠকে ডেকেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘোষণা করা কুড়ি লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ নিয়ে ওই বৈঠকে তীব্র সমালোচনা করলেন তিনি।
তাঁর কথায়, গণতান্ত্রিক কাঠামোয় এই সরকারের কোনও বিশ্বাস নেই। গরিবের প্রতি দয়ামায়া বলেও কোনও বস্তু নেই। কুড়ি লাখ কোটি টাকার যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, তা একেবারেই হাস্যস্পদ। প্যাকেজ ঘোষণার নামে সরকার তথা দেশের সম্পত্তি বেচে দেওয়ার রাস্তা নিয়েছে তারা। সংস্কারের নামে সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে ঢেলে বিক্রিবাটা করে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে।
সনিয়া গান্ধীর কথায়, এখন সরকার তথা দেশের সমস্ত শক্তি শুধু একটি দফতরেই সীমাবদ্ধ। তা হল প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়। যে দফতর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভুলে গেছে। এত বড় একটা সংকট চলছে দেশে। কিন্তু সংসদের অধিবেশন কবে শুরু হবে, কবে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলি আলোচনায় বসবে কেউ তা জানে না।
UPA चेयर पर्सन श्रीमती सोनिया गांधी जी की अगुवाई में विपक्षी दलों की Video Conferencing के द्वारा देश की बात। pic.twitter.com/d2E1geDrg1
— With Congress (@WithCongress) May 22, 2020
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধভ ঠাকরে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার, জেডিএস নেতা দেবগৌড়াও ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে হাজির হয়েছিলেন। তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে অনুপস্থিত ছিলেন বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতী, সপা নেতা অখিলেশ যাদব এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
বৈঠকে সনিয়া গান্ধী বলেন, সরকার শুরুতে অবিবেচকের মতো জানিয়ে দিয়েছিল যে ২১ দিন লকডাউন করলেই করোনার রাহু মুক্তি হবে। কিন্তু এখন সবাই বুঝতে পারছে, এই ভাইরাস আমাদের মধ্যে আপাতত থাকবে। যতদিন না ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে, ততদিন কোনও নিস্তার নেই। কিন্তু সরকার এখনও জানে না বা অনিশ্চিত যে লকডাউন পরিস্থিতি থেকে দেশ বেরোবে কীভাবে।
কংগ্রেস সভানেত্রীর কথায়, বলতে গেলে প্রায় সব অর্থনীতিবিদই পরামর্শ দিয়েছিলেন, কোভিডের অভিঘাতে যে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, তার থেকে বেরোনোর অন্যতম পথ হল, সরাসরি গরিবদের অনুদান দেওয়া। যাতে করে জরুরি ভিত্তিতে দেওয়া সেই টাকা খরচ করে গরিব মানুষ এই সংকট উতরোতে পারে, সেই সঙ্গে বাজারে টাকার জোগান বাড়ে। কিন্তু তার পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন তা গরিবের সঙ্গে নিষ্ঠুর মস্করা করারই নামান্তর। প্রান্তিক চাষী, পরিযায়ী শ্রমিক, ছোট দোকানদার সহ দেশের প্রায় ১৩ কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকা কীভাবে চলবে তা একবারও ভেবে দেখল না সরকার।