
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বছর চারেক আগের ঘটনা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক বৈঠক চলছে। মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে বসে রয়েছেন তৎকালীন দমকল ও আবাসন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। এক এক করে বিধায়কদের দাবিদাওয়া জানতে চাইছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রায়দিঘির বিধায়ক দেবশ্রী রায়কেও প্রশ্ন করেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেখানকার হাসপাতালে মাতৃসদনের দাবি করছিলেন দেবশ্রী। সে কথা শুনে মমতা বলেন, “আচ্ছা ঠিক আছে, এ ছাড়া আর কিছু চাই?” দেবশ্রী তখন কাগজে চোখ বুলোচ্ছিলেন। হঠাৎ মঞ্চ থেকে শোভন বলে ওঠেন, ‘‘একটা সরকারি বাস চায়।’’ যা শুনে মুখ্যমন্ত্রী মুচকি হেসে বলেন, “দেখেছো দেবশ্রী চুপিচুপি কাননকে সব বলে রেখেছে। আমায় বলছে না!’’ হাসির রোল ওঠে।
সেই দেবশ্রী আর ‘চুপিচুপি কাননকে বলার’ সুযোগ পাবেন কি কখনও?
বৃহস্পতিবারের পর অনেকেই মনে করছেন, ‘না’। কারণ পারস্পরিক দূরত্ব বেড়ে এখন কয়েক যোজন। এতটাই যে নাম না করে দেবশ্রী রায়ের বিরুদ্ধে এ বার আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ করলেন শোভন-বৈশাখী।

বৃহস্পতিবার রায়দিঘিতে গিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির এই নেতা-নেত্রী। সেখান শোভন বলেন, “এখানে যিনি বিধায়ক তাঁকে আমিই জিতিয়েছিলাম। তাঁকে রাজনীতিতেও দেখা যায় না, সিনেমাতেও দেখা যায় না। তাঁকে এখানেও জেতানোর জন্য আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।”
শোভনকে যোগ্য সঙ্গত করে বলেন, “এখানকার বিধায়িকার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি টোটো দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছিলেন। বিজেপি দফতরে বসে তিনি সে কথা স্বীকার করেছিলেন। সেই সঙ্গে বলেছিলেন, তাঁকে কেউ নাকি টাকা তুলতে বলেছিল। তা ছাড়া উনি একটি এনজিও চালান। সেটিও ভুয়ো।”
তবে শোভন বা বৈশাখী কেউই দেবশ্রীর নাম মুখে আনেননি। শুধু বলেছেন, রায়দিঘির বিধায়ক।
শোভনের অভিযোগের জবাবও দিয়েছেন দেবশ্রী। সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “ক্ষমা চাওয়ার কী আছে! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে রায়দিঘিতে প্রার্থী করেছিলেন। আর আমি কখন সিনেমা করব আর কখন করব না, সেটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কে বলতে পারে, আমাকে আর সিনেমায় দেখা যাবে না!”
প্রসঙ্গতে ইতিমধ্যে টালিগঞ্জের ইন্ডাস্ট্রিতে গুঞ্জন, নতুন বছরে ব্লক বাস্টার ছবি আসছে। সে ছবিতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকছেন তাঁর এক সময়ের দুই নায়িকা—দেবশ্রী রায় ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
কে জানে! শোভনের কানে হয়তো সেই গুঞ্জন পৌঁছয়নি।