
দ্য ওয়াল ব্যুরো: স্পেকট্রাম নিলামে সবচেয়ে বেশি রেডিওয়েভ কিনে নিল রিলায়েন্স জিও। সোমবার ও মঙ্গলবার এই দু’দিন ধরে স্পেকট্রাম নিলাম করেছে কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রক। ওই নিলামে দর হেঁকে ৪৮৮.৩৫ মেগাহার্টজ রেডিওওয়েভ তুলে নিয়েছে জিও। যার মূল্য ৫৭ হাজার ১২৩ কোটি টাকা।
রিলায়েন্স জিও-র পরই রয়েছে ভারতি এয়ারটেল। তারা তুলে নিয়েছে ৩৫৫.৪৫ মেগাহার্টজ রেডিওওয়েভ। যার মূল্য ১৮,৬৯৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া ১৯৯৩ কোটি টাকায় ভোদাফোন আইডিয়া কিনেছে ১১.৮০ মেগাহার্টজ রেডিওওয়েভ।
নিলাম শেষ হওয়ার পর কেন্দ্রীয় টেলিকম সচিব অংশু প্রকাশ জানিয়েছেন, ৬ দফায় নিলাম হয়েছে। তাতে যা সাড়া পাওয়া গিয়েছে তা প্রত্যাশার তুলনায় বেশি। মোট ৮৫৫.৬০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম নিলাম করে ৭৭ হাজার ৮১৪ কোটি টাকা সরকারের ঘরে এসেছে।
সাতটি ব্যান্ডে ২২৫০ মেগাহার্টজের বেশি স্পেকট্রাম সরকার নিলাম করেছিল। যার ন্যূনতম মূল্য ৪ লক্ষ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছিল। তবে বেছে বেছে কিছু ব্যান্ডের স্পেকট্রামের জন্য দর পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি হল, ৮০০ মেগা হার্টজ, ৯০০ মেগাহার্টজ, ১৮০০ মেগাহার্টজ, ২১০০ মেগাহার্টজ এবং ২৩০০ মেগাহার্টজ। প্রিমিয়াম এয়ারওয়েভ তথা ৭০০ এবং ২৫০০ মেগাহার্টজের ব্যান্ডের জন্য কোনও দর পাওয়া যায়নি বা কেউ দর হাঁকেনি।
নিলামের পুরো টাকা অবশ্য এ বছর পাওয়া যাবে না। চলতি আর্থিক বছরে আপফ্রন্ট পেমেন্ট হিসাবে ১৫ হাজার কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন টেলিকম সচিব।
ভারতে স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি ছিল অতীতে বফর্স কেলেঙ্কারির মতই। অতীতে মনমোহন জমানায় টুজি স্পেকট্রাম বন্টন কাণ্ডে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। ক্যাগ রিপোর্টে বলা হয়েছিল, নিলাম করলে টুজি স্পেকট্রামের অনেক দাম পাওয়া যেত। সরকার তা না করে বেছে বেছে পছন্দের লোকেদের দিয়েছে। তাতে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে ১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা।
যদিও মনমোহন সরকারের বক্তব্য ছিল, নিলাম করলে পরোক্ষে তা ক্রেতাদের উপরই চাপত। আরও বেশি টারিফ দিতে হত ক্রেতাদের। সে ক্ষেত্রে ভারতে টেলিকমের সম্প্রসার অনেক পিছিয়ে যেত। শেষমেশ টুজি কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে প্রায় সব অভিযুক্তই বেকসুর প্রমাণিত হয়।
এখন অবশ্য স্পেকট্রামের নিলাম বাধ্যতামূলক হয়ে গিয়েছে। টেলিকম সচিব এদিন জানিয়েছেন, এই স্পেকট্রাম বন্টনের পর ভারতে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।