
এটিকে- মোহনবাগান – ১
কেরালা ব্লাস্টার্স – ০
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এটিকে- মোহনবাগানকে জয় এনে দিলেন ফিজির তারকা ফুটবলার রয় কৃষ্ণ। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে মনবীর সিংয়ের পাস থেকে দুরন্ত ইনস্টেপে গোল করে দলকে মধুর জয় এনে দিলেন তিনি। তাঁকে ঘিরে সবুজ মেরুনের আশা-ভরসা নিয়ন্ত্রিত হবে, এটা বলে দেওয়া যায়।
ম্যাচে বহুবার তিনি গোলের জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিলেন, কিন্তু গোলটাই করতে পারছিলেন না। সতীর্থরাও গোল মুখে গিয়ে তাঁকেই পাস দিচ্ছিলেন। গতবারও তিনি এটিকে দলকে টেনেছিলেন, এবারও যে তিনি আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের দলকে টানবেন, পরিষ্কার বোঝাই যাচ্ছে।
বিরতির পরেই চেনা ছন্দে ফিরেছে মোহনবাগান। তাদের খেলার কৌশল বদলে যায় দ্বিতীয়ার্ধেই। আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলতে থাকে তারা। যদিও এটাও বোঝা গিয়েছে হাবাস তাঁর দলের ফুটবলারদের প্র্যাকটিসে দূরপাল্লার শট মারান। নাহলে শুক্রবার খেলায় মোহনবাগান সব মিলিয়ে মোট নয়টি শট মেরেছে, তার মধ্যে দুটি গোল হলে বলার কিছু থাকত না।
খেলার প্রথমার্ধে ঘুমন্ত ফুটবল উপহার দিল দুই দলই। তার মধ্যে বল পজেশনের দিক থেকে কেরালা ব্লাস্টার্স অনেকটাই এগিয়ে ছিল। প্রায় ৬১ শতাংশ তাদের বলের দখল ছিল। মোহনবাগানের ফুটবল দেখে বোঝাই গিয়েছে তাদের মধ্যে সংঘবদ্ধতা তৈরি হয়নি।
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ, সেটি দেখেই বোঝা গিয়েছে। তাও রয় কৃষ্ণ যদি তিনটি গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারতেন, তা হলে গোলশূন্যভাবে শেষ হতো না প্রথমার্ধ। একটি শট তাঁর বারের ওপর দিয়ে গিয়েছে। বাকি দুটি শটেও লক্ষ্য ঠিক ছিল না, না হলে মোহনবাগান তখনই এগিয়ে যেত।
কেরালা দলটিকে ভাল তৈরি করেছেন কোচ কিবু ভিকুনা। তিনি আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলিয়েছেন দলকে। ছোট ছোট পাসে খেলেছে তারা। বলের দখল সেই কারণেই বেশি। কিন্তু দুটি দলের সমস্যা মিস পাস প্রচুর। তিনটি পাস ঠিক হওয়ার পরে চতুর্থ পাসটি ঠিক ছিল না। কিন্তু কেরালা দলে ভালমানের গোলগেটার নেই, এই নিয়ে ভিকুনাকে ভুগতে হবে। ভিকুনার এদিন জন্মদিন ছিল, এই দিনে তিনি প্রাক্তন দলকে হারাতে পারলেন না।
ভিকুনা ম্যাচে দলকে সাজিয়েছিলেন ৪-২-৩-১ কৌশলে, অপরদিকে মোহনবাগান কোচ দলকে সাজান ৩-৫-২ ছকে। যদিও খেলায় দেখা গিয়েছে মোহনবাগান কার্যত সামনে একা রয় কৃষ্ণকে রেখেই খেলেছে।
করোনা আবহের মধ্যে আইএসএলের প্রথম ম্যাচ। সেই নিয়ে খানিকটা চিন্তা ছিল সংঘটকদের। কিন্তু প্রথম দিন পাস করেছে তারা। মাঠে ছিল না দর্শক, স্টেডিয়ামে ফ্যান ওয়াল থাকলেও তার উন্মাদনা টের পাওয়া যায়নি শেষমেশ।
মোহনবাগানের রক্ষণভাগ নিয়ে সমস্যা দেখা গিয়েছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে সন্দেশ, প্রীতম, তিরিরা এক লাইনে চলে এসেছেন। সন্দেশ একবার ক্লিয়ার করতে গিয়ে বিপদ ডেকে এনেছিলেন। কেরালার আবুদল সামাদ নামে ছেলেটি দারুণ খেলেছেন, তিনি সারাক্ষণ বিপক্ষ ডিফেন্সকে ত্রস্ত রেখেছিলেন।
সব থেকে বড় কথা, সারা ম্যাচে বলের দখল মোহনবাগানের কম থাকলেও শেষমেশ তারাই জয় হাসিল করেছে, এটিও বিশেষ তাৎপর্যের।
এটিকে- মোহনবাগান : অরিন্দম ভট্টাচার্য্য, প্রীতম কোটাল, সন্দেশ জিঙ্ঘান, তিরি, প্রবীর দাস, প্রণয় হালদার (মনবীর সিং), কার্ল ম্যাকহুগ, জেভিয়ার হার্নান্দেজ, মাইকেল সুসাইরাজ (শুভাশিস বসু), এডু গার্সিয়া, রয় কৃষ্ণ (ডেভিড উইলিয়ামস)।
কেরালা ব্লাস্টার্স : আলবিনো গোমেস, প্রশান্ত কে, বাকারি কোনে, কোস্তা, জেসেল কার্নিইরো, সের্গিও সিদোচা, ভিসেন্তে গোমেজ, ঋত্বিক দাস, আবদুল সামাদ, নাওরেম (সত্যসেন), গ্যারি হুপার।