
ইনজুরি টাইমে প্রিতমের গোলে ড্র মোহনবাগানের, দুরন্ত খেলেও পয়েন্ট খোয়ালো হায়দরাবাদ
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পুরো দলটা যেন একসঙ্গে দাঁড়িয়ে গেল। ডিফেন্স থেকে স্ট্রাইক লাইন, সবার ফর্ম যেন একদিনেই খারাপ হল। এমনকি তেকাঠির নীচে এতটা খারাপ হয়তো এই মরসুমে একবারের জন্যও মনে হয়নি গোল্ডেন গ্লাভসের দাবিদার অরিন্দম ভট্টাচার্যকে। আর তার ফলে ১০ জনের হায়দরাবাদ এফসির কাছে হারের মুখে চলে গিয়েছিল এটিকে মোহনবাগান। কিন্তু ইনজুরি টাইমে প্রিতম কোটালের গোলে ১ পয়েন্ট পেল হাবাসের দল।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকে দু’দলই আক্রমণাত্মক শুরু করে। ম্যাচের চার মিনিটের মাথায় কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বল পেয়ে যান বাগানের স্ট্রাইকার ডেভিড উইলিয়ামস। বল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনি। বাধ্য হয়ে তাঁকে ফাউল করেন চিংলেন সানা। সরাসরি লাল কার্ড দেখান রেফারি।
লাল কার্ডের পরে মনে হয়েছিল ম্যাচে দাপট দেখাবে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। কিন্তু ৭ মিনিটের মাথায় প্রীতম কোটালের ব্যাক পাস বুঝতে না পেরে ভুল করেন তিরি। বাগান বক্সে বল পান সান্তানা। তাঁর নিরীহ শট বাগান গোলকিপার অরিন্দম ও ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে ঢুকে যায় জালে। ম্যাচে এগিয়ে যান নিজামের দল।

১০ জন হয়ে গেলেও নিজেদের আক্রমণ থেকে পিছিয়ে আসেনি হায়দরাবাদ। দুই প্রান্ত ধরে লিস্টন কোলাসো, হলিচরণ নার্জারিরা বারবার আক্রমণে উঠছিলেন। অন্যদিকে মাঝেমধ্যে সুযোগ তৈরি করছিল মোহনবাগানও। কিন্তু ভাগ্য হয়তো তাদের সঙ্গে ছিল না। একবার রয় কৃষ্ণের প্রথম টাচ তাঁকে ধোকা দেয়। আবার তাঁর ক্রস থেকেই পা ছোয়াতে পারলে গোল পেতে পারতেন ডেভিড উইলিয়ামস। কিন্তু মজবুত ছিল হলুদ ব্রিগেডের ডিফেন্স। প্রথমার্ধে ১-০ ব্যবধানে এগিয়েই মাঠ ছাড়ে হায়দরাবাদ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মাঝমাঠে লেনি রদ্রিগেজের জায়গায় জয়েশ রানেকে মাঠে আনেন বাগান কোচ হাবাস। কিছুটা আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করেন তাঁরা। তার ফলও মেলে। ৫৬ মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে বল ধরে ডান প্রান্তে মনবীরের উদ্দেশে বল বাড়ান ডেভিড উইলিয়ামস। প্রথম পোস্টে লক্ষ্মীকান্ত কাট্টিমনিকে পরাস্ত করে গোল করে যান মনবীর।
এদিন খুবই খারাপ খেললেন বাগানের সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার তিরি। গোটা ম্যাচে বারবার তাঁকে পরাস্ত করলেন হায়দরাবাদের ফুটবলাররা। অন্যদিকে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেন আর এক সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার সন্দেহ ঝিঙ্গান। সন্দেশ ওঠার পরেই লং থ্রো থেকে আরিদানের হেড বক্সের বাইরে পেলেন সবে মাঠে নামা অলবার্গ। বাঁ’পায়ের শটে গোল করে হায়দরাবাদকে ফের এগিয়ে দেন তিনি। গোটা মোহনবাগান ডিফেন্স এক জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়েছিল।
বাকি সময়ে দেখে মনে হচ্ছিল আর হয়তো ম্যাচে ফিরতে পারবে না বাগান। কিন্তু ইনজুরি টাইমে বক্সের মধ্যে থেকে কোমল থাটালের ক্রস কাট্টিমনি প্রতিহত করলে ফিরতি বলে গোল করে যান প্রিতম কোটাল। ২-২ হয় ম্যাচের ফল।
এদিন বাগানের ড্র করার ফলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যাওয়ার সুযোগ বজায় থাকল মুম্বই সিটি এফসির। নিজেদের পরের ম্যাচে মুম্বই জিততে পারলে ২৮ ফেব্রুয়ারি মোহনবাগান ও মুম্বইয়ের ম্যাচই হয়তো স্থির করবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোন দল ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবে। যদিও অ্যাডভান্টেজ থাকবে বাগানের কাছেই। ড্র করতে পারলেই লিগ শীর্ষে শেষ করতে পারবে তারা।