
ফাটল আতসবাজি, সবুজ মেরুনে আবিরে স্নাত শহর, কৃষ্ণের মুখে খেতাবের কথা
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দীপাবলিতে সবুজ মেরুন সমর্থকরা যা করতে পারেননি, সেটাই শুক্রবার গোয়ায় ডার্বি জয়ের পরে সুদে-আসলে করে নিয়েছেন। সাড়ে নয়টার পরে খেলা শেষ হতেই চারিদিক মুখরিত হয়ে ওঠে আতসবাজির আওয়াজে।
পাড়ায়-পাড়ায় ফেটেছে বাজি। আদালতের নির্দেশে দীপাবলিতে বাজি ফাটানো নিষিদ্ধ ছিল। অনেকেরই ইচ্ছে থাকলেও সাহসে কুলোয়নি। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও মোহনবাগান সমর্থকরা আনন্দে উদ্বেল হয়ে ওঠেন।
গোয়ায় তিলক ময়দানে ডার্বির প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল ভাল খেলেছে। কয়েকটি গোলের সুযোগও পায়। কিন্তু সেগুলিকে কাজে লাগাতে পারেননি পিলকিনটনরা। দেবজিৎ গোলের নিচে দুরন্ত না হয়ে উঠলে সমস্যা আরও প্রবল হত লাল হলুদের।
বিরতির পরেই খেলায় ফেরে এটিকে-মোহনবাগান। সেইসময় থই পায়নি বিপক্ষ দল। ফিজির তারকা রয় কৃষ্ণ ফের গোল করতেই শহরের আনাচে-কানাচে শুরু হয়ে যায় হুল্লোড়। ইস্টবেঙ্গলের খেলা দেখে মনে হয়নি তারা ম্যাচে ফিরতে পারে।
সেই কারণেই খেলার বয়স যত বেড়েছে, ততই দেখা গিয়েছে দলের অশ্বমেধের ঘোড়া ভালই ছুটছে। সেইসময় প্রবীর দাস, প্রীতম কোটালরা দারুণ খেলে ম্যাচের রং করেছেন সবুজ মেরুন।
মোহনবাগান সমর্থকরা দ্বিতীয়ার্ধে গোলের পরেই নিশ্চিত হয়ে যান তারা আজ হারবেন না। কারণ দলের খেলার ছন্দ দেখে বুঝে গিয়েছিলেন কোচ হাবাস রণনীতি বদলে দিয়েছেন। তিনি বিরতির পরেই আক্রমণ নির্ভর খেলা খেলতে ভালবাসেন। এদিনও তাই করেছেন স্প্যানিশ কোচ।
কৃষ্ণের গোলের পরে লাল হলুদের ডিফেন্স ফালাফালা হয়ে গিয়েছিল। মনবীর সিংয়ের গোলের পরে সেটি পূর্ণ হয়ে যায়। তারপরেই বাইপাসের ধারে সবুজ মেরুন সমর্থকরা সামাজিক দুরত্ব ভুলে পথে নেমে গিয়েছিলেন।
খেলা হচ্ছে গোয়ার মাঠে, কিন্তু লাল হলুদ মাঠে বসেছিল জায়ান্ট স্ক্রিন। সেখানে সমর্থকরা ভিড় জমিয়েছিলেন। হাওড়ায় বহু অঞ্চলে সবুজ মেরুন সমর্থকরা মিলে বড় পর্দায় খেলা দেখেছেন। খেলা শেষ হওয়ার আগেই তাঁরা দল করে রাস্তায় দলের পতাকা, ড্রাম নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। হাতে ছিল বিরাট পতাকা।
এমনকি যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সামনেও বহু মোহনবাগান সমর্থকদের দেখা গিয়েছে। যেহেতু কলকাতায় খেলা হলে যুবভারতীতেই খেলা হতো, সেই কারণেই প্রাণের মাঠে ভিড় জমিয়ে উৎসব পালন করেছেন তারা। মুখে ছিল রয় কৃষ্ণ, প্রবীর দাসদের নামে জয়ধ্বনি। এমনকি কোচ হাবাসের নামেও উল্লাস করতে দেখা গিয়েছে।
বাজি তো ছিলই, বহু জায়গায় দেখা গিয়েছে আবির নিয়ে খেলেছেন সমর্থকরা। ডার্বি জয় এত মসৃণ হবে, কেউ ভাবতে পারেননি, তাই আনন্দও বেশি ছিল।
এদিকে সমর্থকদের উৎসবের মধ্যেই মোহনবাগানের তারকা বিদেশী ফিজির রয় কৃষ্ণ ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন, তাঁরা এবার খেতাব জয়ের জন্য দৌড়বেন। বলেছেন, ‘‘দুটি ম্যাচই আমরা জিতেছি। এদিনও রক্ষণভাগ দারুণ খেলেছে। তারা গোল না খাওয়ায় আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল।’’
আইএসএলের অভিষেক ডার্বিতে প্রথম গোল তাঁর। স্বভাবতই উল্লসিত হাবাসের দলের প্রাণভোমরা। ‘‘এটা দারুণ, একটা ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে গেল আমার নাম, খুবই ভাল লাগছে।’’