
ব্রাইট দেখাচ্ছেন স্কিলের জাদু, ইস্টবেঙ্গলকে জেতাল অবশ্য স্টেইনম্যানের ‘জার্মান ফ্লিক’
এস সি ইস্টবেঙ্গল : ১
বেঙ্গালুরু এফসি :০
দ্য ওয়াল ব্যুরো: টানা পাঁচ ম্যাচে অপরাজেয় ইস্টবেঙ্গল। আর টানা চার ম্যাচে হার বেঙ্গালুরু দলের। লাল হলুদ দল ১-০ গোলে হারিয়ে অনেকটাই ভাল জায়গায় চলে এল রবি ফাউলারের দল। ১০ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট দশ।
বিরতির পরে এভাবে যে ইস্টবেঙ্গলের খেলা বদলে যাবে, ভাবা যায়নি। কোচ রবি ফাউলারের কৌশল বোঝা খুব সমস্যার। তিনি প্রথমার্ধে বরং গুটিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণ করে থাকেন। কিন্তু এদিন তিনি রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকতে পারেননি। কেননা রেফারি তাঁকে গত ম্যাচে কার্ড দেখিয়েছিলেন। সেই জন্য তিনি গ্যালারি থেকে নির্দেশ দিচ্ছিলেন সহকারি গ্রান্টকে।
সেই নির্দেশ থেকেই কী লাল হলুদ এতটা রক্ষণাত্মক হয়ে গেলেন দ্বিতীয়ার্ধে এসে? সেইসময় বরং বেঙ্গালুরু এফসি বারবার আক্রমণে গিয়েছে। বন্যার জলের মতো সেই আক্রমণগুলিকে রুখে দিয়েছেন একা দেবজিৎ ঘোষ। তিনি এদিনও তিনটি নিশ্চিত গোল বাঁচিয়েছেন।
দিনের সেরা সেভ যদিও বেঙ্গালুরুর গুরপ্রিৎ সিং সাঁধুর। কেন তাঁকে দ্য ওয়াল বলে ডাকা হয়, সেটাই বুঝিয়েছেন তিনি অভিজ্ঞতার ঝুলি উপুর করে। ম্যাচের ৭০ মিনিটে ব্রাইটের শট তিনি গোল পোস্টকে ছোট করে বাঁচিয়ে দিয়েছেন।
অনবদ্য সেভ, সেইসময় রাহুল ভেকেও পরাস্ত হয়ে গিয়েছেন। ব্রাইট শটও মেরেছিলেন, কিন্তু গুরপ্রিৎ যেভাবে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচান, তাতে কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়।
এদিনও ইস্টবেঙ্গলের নবাগত বিদেশী নাইজেরীয় ব্রাইটের যা ঝলক দেখা গেল, তিনি দলের সম্পদ হতে চলেছেন। ব্রাইটের স্কিল তো রয়েইছে, পাশাপাশি তিনি বিপক্ষ ডিফেন্ডারদের ট্যাকল এড়িয়ে খেলতে জানেন। তিনি চনমনে, সুযোগসন্ধানী ও দ্রুতগতিসম্পন্ন, যে কারণে বাকিদের টপকে সহজেই গোল বক্সে পৌঁছে যেতে পেরেছেন।
খেলার একেবারে শেষ ১৫ মিনিট দুরন্ত খেলা হয়েছে। দুটি দলই আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলেছে। বেঙ্গালুর যেমন সমতা ফেরানোর জন্য মরিয়া ছিল, তেমনি লাল হলুদ যোদ্ধারাও ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন।
এতদিন ইস্টবেঙ্গলের খেলার মধ্যে সমন্বয় ছিল না। রক্ষণ ও মাঝমাঠের মধ্যে যোগসূত্র ছিল না। সেটি ব্রাইট আসায়, স্টেইনম্যানের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স, সেই সঙ্গে নারায়ণ দাস ও অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়ের জুটি দারুণভাবে ক্লিক করে যাওয়ায় ফাউলারের দলের খেলা বদলে গিয়েছে।
গোলটিও এসেছে তারই ফসল হিসেবে। খেলার ২০ মিনিটের মাথায় অঙ্কিতের পাস ধরে নারায়ণ ক্রস করলে স্টেইনম্যান দুরন্ত জার্মান ফ্লিকে বল জালে ঠেলে দিয়েছেন। পলকের মধ্যে গোল হয়ে গিয়েছে। চোখ বুজলেও এমন গোল দেখা যাবে। এরকম গোল বুন্দেশলিগায় দেখা যায়, সেই গোলই দেখা গেল এই আসরে।
যত দিন যাচ্ছে, এই লাল হলুদ দলের বিদেশীদের ভাল করে চেনা যাচ্ছে। তাঁরা ক্রমে নিজেদের জাত চেনাচ্ছেন। ব্রাইট, মাঘোমাকে মার্কি করলেন বেঙ্গালুরু ডিফেন্ডার, আর ফাঁক দিয়ে আসল কাজটি সেরে দিলেন স্টেইনম্যান।
এস সি ইস্টবেঙ্গল : দেবজিৎ মজুমদার (গোলরক্ষক), ড্যানি ফক্স, স্কট নেভিল, রাজু গায়কোয়াড়, নারায়ণ দাস, অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়, মিলন সিং, মাত্তি স্টেইনম্যান, জ্যাকুয়েস ম্যাঘোমা, ব্রাইট এনোবাখারে, হরমনপ্রীত সিং।
বেঙ্গালুরু এফসি: গুরপ্রিৎ সিং সান্ধু (গোলরক্ষক), পরাগ শ্রীবাস, রাহুল ভেকে, জুয়ানন, অজিত কুমার, সুরেশ ওয়াংজম, দিমাস দেলগাডো, এরিক পারতালু, উদান্ত সিং, ক্লেটন সিলভা, সুনীল ছেত্রী।