
করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে উচ্ছ্বসিত, প্রথম ‘ক্রীড়া দম্পতি’ হিসেবে অলিম্পিকে যাচ্ছেন অতনু-দীপিকা
দ্য ওয়াল ব্যুরো: টোকিও অলিম্পিকে যাওয়ার আগে ভারতীয় তিরন্দাজরা সবাই করোনা ভ্যাকসিন নিলেন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এত প্রভাবশালী হয়েও যা পারল না, সেটি করে দেখাল ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থা। তারা প্রথম ধাপে তিরন্দাজদের দিয়ে শুরু করল, পরে একেকটি ইভেন্ট ধরে বাকি অ্যাথলিটদের দেওয়ানো হবে।
পুনের আর্মি স্পোর্টস ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছেন দেশের নামী পুরুষ ও মহিলা তিরন্দাজরা। আট তিরন্দাজের মধ্যে ছিলেন পুরুষদের মধ্যে অতনু দাস, তরুণদীপ রাই, প্রবীন যাদব এবং বি ধীরজ (রিজার্ভ)।
মহিলাদের মধ্যে ছিলেন, অতনুর স্ত্রী দীপিকা কুমারী, অঙ্কিতা ভকত, কমলিকা বারি এবং মধু বেদওয়ান (রিজার্ভ)।
২৩ জুলাই থেকে টোকিও অলিম্পিক শুরু হবে। তার আগে প্রস্তুতি শিবিরে প্রবেশের আগে তিরন্দাজদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হল। টুইটারে করোনা প্রতিষেধকের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর বাংলার ছেলে অতনু দাস লিখেছেন, “ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত ডোজ নেওয়া শেষ। পুরো প্রক্রিয়া মসৃণভাবে সম্পন্ন করার জন্য আর্মি স্পোর্টস ইনস্টিটিউটকে অনেক ধন্যবাদ।”
আরও প্রাসঙ্গিক বিষয়, এই প্রথম ভারত থেকে কোনও ক্রীড়া দম্পতি হিসেবে অলিম্পিকে অংশ নিতে চলেছেন অতনু ও দীপিকা।
করোনা পরবর্তী সময়ে তাঁদের টোকিও অলিম্পিকের প্রস্তুতি চলছে অনেকদিন ধরেই। কিছুদিন আগে পুণেতে অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জনের জন্য যে ফাইনাল সিলেকশন ট্রায়ালের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই ট্রায়ালেই টোকিও অলিম্পিকের টিকিট নিশ্চিত করেছেন অতনু দাস এবং দীপিকা কুমারী।
অলিম্পিক যোগ্যতা নির্নায়ক ট্রায়ালে পরভিন প্রথম, অতনু দাস দ্বিতীয় এবং তরুন রাই তৃতীয় হয়েছিলেন। মেয়েদের মধ্যে দীপিকা কুমারী প্রথম, অঙ্কিতা ভকত দ্বিতীয় ও কমলিকা বারি তৃতীয় হয়েছিলেন। তিনজনই ঝাড়খণ্ড থেকে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
এই মূহুর্তে খুব ভাল সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন অতনু-দীপিকা। লকডাউনের সময় তাঁরা বিয়ে করেছেন। এই বছরেই ‘অর্জুন’ সম্মান পেয়েছেন অতনু। দীপিকা কুমারী আগেই অর্জুন পুরস্কার পেয়েছেন।
2nd and Final Dose of Vaccine is Done. pic.twitter.com/wGmRe8YOdH
— TheAtanuDas (@ArcherAtanu) April 7, 2021
অতনু বরানগরের ছেলে, কলকাতা সাই থেকেই উত্থান তাঁর। দীপিকা জামশেদপুরের অটো ড্রাইভারের মেয়ে। জাতীয় শিবিরে থাকার সময়ই তাঁদের মধ্যে প্রেম ও পরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া। অতনু পুনে থেকে ফোনে বলছিলেন, আমাদের দুইজনের কাছেই এই অলিম্পিক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের সম্মান রাখতে হবে।
এর আগেরবারই রিও অলিম্পিকে অতনু তিরন্দাজির ফাইনাল রাউন্ডে পৌঁছে গিয়েছিলেন। যেতে পেরেছিলেন শেষ আটে, তারপর আর পারেননি প্রথম চারে স্থান করে নিতে। তাই বলছিলেন, ‘‘এবারের লড়াই আরও কঠিন, ভাল করে করোনার সময়ে প্রস্তুতি নিতে পারিনি। তবে যেহেতু দীপিকা সঙ্গে ছিল, মানসিক একটা জোর ছিল আমার।’’
এর আগে অতনু দুইবার অলিম্পিকে অংশ নিয়েছেন, আবার দীপিকাও তিনবার অলিম্পিকে গিয়ে গর্বিত করেছেন। কিন্তু সেইসময় তাঁরা বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হননি, তাই এবার তাঁদের কাছেও স্বপ্নের যাত্রা হতে চলেছে।