
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চলতি অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতীয় দলের চোটের বহরে সবাই আতঙ্কিত। একটা পুরো দলের কতজন ফিট রয়েছেন, সেটাই এই মুহূর্তে বড় প্রশ্ন। মিনি হাসপাতাল না বলে পুরো হাসপাতালের কেবিন বলা যেতে পারে বর্তমান ভারতীয় দলকে।
তালিকায় চোট পাওয়া বাতিল ক্রিকেটারদের নাম বললেই একটা আস্ত একটা ইন্ডিয়া দল হয়ে যাবে। লোকেশ রাহুল থেকে শুরু করে রবীন্দ্র জাদেজা, মহম্মদ সামি থেকে শুরু করে যশপ্রিৎ বুমরাহ, আবার হনুমা বিহারী, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, উমেশ যাদব, ঈশান্ত শর্মা, নবতম সংযোজন নবদীপ সাইনি, সবাই চোটের তালিকায় বাতিল হয়ে গিয়েছেন। খেলাতে হচ্ছে একেবারে নবীশ এক বোলিং লাইনআপকে, যাঁদের দুইজনের সবেমাত্র অভিষেক হয়েছে, বাকি তিনজন একটি বা দুটি করে টেস্ট খেলেছেন।
কেন এত চোট এই দলে, সেই নিয়ে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে। বলা হচ্ছে, টানা খেলায় ক্লান্ত ক্রিকেটাররা। কিন্তু এ বছর খেলা হল কোথায় যে চোটে সবাই জেরবার হয়ে পড়বে! অনেকেই বলছেন, আইপিএলের কথা, কিন্তু তা যদি হয়, সেটি তো প্রতিবছরই হয়ে থাকে, তা হলে এবারই বা আইপিএলের কথা বলা হচ্ছে কেন?
বলা হচ্ছে, করোনায় এবার শুরু থেকে ক্রিকেটাররা সবাই ঘরবন্দী ছিলেন সাধারণ মানুষদের মতোই। যখন খেলার অনুমতি মিলল, সেইসময় সবাই মাঠে নেমে পড়েছেন। চোট প্রবণতা সেইসময় স্বাভাবিকভাবেই ছিল। তারপর চার মাস তাঁরা বিদেশে কাটাচ্ছেন, সেই কারণে মানসিক একটা হতাশার বিষয় থাকেই।

তবুও যেহেতু পেশাদার দল, সেই কারণে আনফিট ক্রিকেটারের সংখ্যা বাড়লে দলের ফিজিওর ওপর চাপ পড়বেই, সেই হিসেবেই বোর্ডের প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এই বিষয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু করেছেন। তিনি এই বিষয়ে কথা বলেছেন বোর্ড সচিব জয় শাহ ও দলের যাঁরা ফিজিও রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গেও। কী কারণে চোট এত বাড়ছে, সেই নিয়ে জেনেছেন মহারাজ। যিনি নিজেও অসুস্থ, দুই সপ্তাহ আগে এমন একটি দিনে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারপরেও তিনি দলের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন, এটিও বড় বিষয়।
শুধু অস্ট্রেলিয়া সিরিজ নয়, চোট-আঘাতের এই সমস্যা ঘরের মাঠে আসন্ন ইংল্যান্ড সিরিজেও চাপে ফেলতে পারে ভারতীয় দলকে। একসঙ্গে এতজন ক্রিকেটার চোটের কবলে পড়ায় দল গঠনে কিছুটা হলেও সমস্যা হবেই। অস্ট্রেলিয়া সফরে দলের সঙ্গে রয়েছেন দুই ফিজিও নীতিন প্যাটেল এবং যোগেশ পার্মার। এছাড়া কন্ডিশনিং এক্সপার্ট হিসেবে রয়েছেন নিক ওয়েব ও সোহম দেশাই। এঁদের প্রত্যেকের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
এই প্রসঙ্গে বোর্ডের এক কর্তা জানান, ‘‘আইপিএলকে কখনই দোষ দেওয়া ঠিক নয়। কারণ বাকি দলের ক্রিকেটাররাও তো আইপিএল খেলেই অন্য টুর্নামেন্টের ম্যাচ খেলছে। তাঁদের যখন কিছু হচ্ছে না, তা হলে আমাদের ক্রিকেটারদের হবে কেন? এই বিষয়ে বোর্ড প্রেসিডেন্ট ও সচিব দলের ফিজিওদের সঙ্গে কথা বলেছেন।’’
এদিকে, ২৭ জানুয়ারি আরটি-পিসিআর টেস্টের পরই চেন্নাইয়ে জৈব সুরক্ষা বলয়ে ঢুকে যাবে গোটা দল। অর্থাৎ হাতে আর মাত্র ১২দিন। ইংল্যান্ড সিরিজে কাদের পাওয়া যাবে, সেটি ক্রিকেটারদের থেকে ফিট সার্টিফিকেট পেলেই বোঝা যাবে।