
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন আটের দশকের ময়দান কাঁপানো ফুটবলার মজিদ বাসকর। ইরানের এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ইস্টবেঙ্গল ও মহামেডান স্পোর্টিংয়ের এই প্রাক্তন তারকাকে।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে ইরানে নিজের বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন মজিদ। তাঁকে খুররমশায়ারের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অবশ্য বাদশার অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানিয়েছে তাঁর পরিবার। তবে বুকে ব্যথা রয়েছে মজিদের। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরেই তাঁর করোনা পরীক্ষা করে দেখা হয়। তাঁর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে খবর।
মজিদ বাসকরের ভাইপো ফরিদ বাসকর জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎই বুকে ব্যথা অনুভব করেন মজিদ। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা জানিয়েছেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন মজিদ। শুক্রবার তাঁর অ্যাঞ্জিওগ্রাফি হওয়ার কথা। তবে এখন অনেকটাই ভাল রয়েছেন প্রাক্তন ফুটবলার। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি।
কলকাতা ময়দানে ইস্টবেঙ্গল ও মহামেডান স্পোর্টিংয়ের হয়ে খেলেছেন মজিদ। ইস্টবেঙ্গলে মোট ২৪ মাস খেলেছেন তিনি। তারপরে দল বদল করে চলে যান সাদা কালো শিবিরে। কিন্তু তার মধ্যেই কলকাতার, বিশেষ করে লাল-হলুদ সমর্থকদের কাছে নয়নের মণি হয়ে উঠেছিলেন এই ইরানীয় ফুটবলার।
দুরন্ত স্ট্রাইকার হলেও অসংযমী জীবনযাপনের জন্য কেরিয়ার লম্বা হয়নি মজিদের। সবার অলক্ষ্যেই ভারত ছেড়ে ইরান চলে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তারপরেও ভারতের সঙ্গে যোগ তাঁর শেষ হয়নি। তার আরও একটা কারণ অবশ্য অভিন্ন হৃদয় বন্ধু জামশিদ নাসিরি। একই সঙ্গে খেলা শুরু করার পরে মজিদ ইরান চলে গেলেও জামশিদ থেকে গিয়েছেন কলকাতাতেই। এখানকারই লোক হয়ে গিয়েছেন তিনি।
গত বছরই ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শতবর্ষ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছিলেন মজিদ। গিয়েছিলেন তাঁর পুরনো ক্লাবে। বেশ কয়েকটা দিন কাটিয়ে ছিলেন তাঁর পুরনো শহরে। যে শহর তাঁকে বাদশার তকমা দিয়েছে সেই শহরটাকে ঘুরে দেখেছিলেন। সেইসঙ্গে দেখেছিলেন তাঁকে ঘিরে লাল-হলুদ সমর্থকদের উন্মাদনা। যে মজিদের খেলা দেখেননি এখনকার প্রজন্মের অনেকেই, বাবা-ঠাকুর্দার কাছে তাঁর গল্প শুনেছেন, সেই মজিদকে দেখতে ক্লাবে ছুটে এসেছিলেন হাজার হাজার তরুণ দর্শক। আর এই উন্মাদনা ও আন্তরিকতায় যে তিনি অভিভূত তেমনটাই জানিয়েছিলেন মজিদ। ফের একবার গায়ে চাপিয়ে নিয়েছিলেন লাল-হলুদ জার্সি। যে জার্সি গায়ে অসংখ্য গোল রয়েছে তাঁর। স্বভাবতই তাঁর অসুস্থতার খবরে উদ্বেগে রয়েছেন লাল-হলুদ সমর্থকরা।