
হেরে প্লে অফে গেলেও এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের স্বপ্ন মান্ডবী নদীর তীরে ভেসে গেল রয় কৃষ্ণদের
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সুপার সানডের এই ম্যাচটিকে কার্যত বলা হচ্ছিল ফাইনাল। এই কারণেই যে এই ম্যাচে এটিকে-মোহনবাগান এক পয়েন্ট পেলেই যোগ্যতা পেত এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেলার। কিন্তু এদিন এটিকে-মোহনবাগান ০-২ গোলে প্রতিপক্ষ মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে হারের কারণে সেই সোনার সুযোগ হারিয়েছে। বরং দারুণ ম্যাচ জিতে মুম্বই খেলবে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ।
হাবাসের দল অবশ্য আইএসএলের প্লে অফে গেলেও কিন্তু এএফসি লিগে খেলতে না পারার ব্যর্থতা তাদের নিতেই হবে। সারা ম্যাচে পুরো বেদম হয়ে গিয়েছেন রয় কৃষ্ণরা। তারা যে এগিয়ে থেকে খেলতে নেমেছিলেন, সেটাই বোঝা যায়নি। আসল ম্যাচে দলের ফুটবলাররা স্নায়ুর লড়াইয়ে হার মেনেছেন।
খেলা শুরুর কিছুক্ষনের মধ্যেই একটি চমকপ্রদ তথ্য পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে মুম্বই সিটি এফসি ১০টি ম্যাচে প্রথমে গোল দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পরে মোট ৮টি ম্যাচে তারা জিতেছে, হেরেছে মাত্র দুটিতে।
তাই অশনিসঙ্কেত রবিবার এই ম্যাচেও ছিল। কারণ খেলার সাত মিনিটের মধ্যেই মুম্বই সিটি গোল করে এগিয়ে গিয়েছে এটিকে-মোহনবাগানের বিপক্ষে। বিদেশী আহমেদ জহুয়ার ফ্রিকিক থেকে দুরন্ত হেডে গোল করে গিয়েছেন নাইজেরীয় মৌরতাদা। সেইসময় বক্সে সন্দেশ, তিরিরা থাকলেও তাঁকে কভার করতে ব্যর্থ। এমনকি অভিজ্ঞ গোলরক্ষক অরিন্দমেরও কিছু করার ছিল না।
এমনকি ৩৯ মিনিটে মুম্বইয়ের দ্বিতীয় গোলেও পরিষ্কার, হাবাসের দলের রক্ষণ আসল সময়ে জবুথবু হয়ে যাচ্ছে। না হলে মানবপ্রাচীর থাকা সত্ত্বেও মুম্বইয়ের হার্মান সান্তানার ফ্রিকিক পোস্টে লেগে ফেরত এলে তা থেকে দুর্দান্ত হেডে বল জালে রাখেন বিদেশী ওগবেচে। তখনই খেলার ফল হয়ে যায় ২-০।
প্রথমার্ধে ভাল ফুটবল হয়েছে। দুই কোচের ট্যাকটিক্যাল লড়াই ছিল। দুটি দলই আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে খেলেছে। হাবাসের দলের ফুটবলাররা চাইছিলেন সেট পিস থেকে গোলের ফায়দা তুলতে, কেননা চলতি আসরে মোট ৪৬ শতাংশ ক্ষেত্রে রয় কৃষ্ণরা সেটপিস থেকে গোল করেছেন।
এদিনও তাঁরা চেষ্টা করলেও মুম্বই সিটি এফসি-র রক্ষণভাগের কাছে থমকে গিয়েছে সেই সম্ভাবনা। তার মধ্যেও রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামস অনবরত বিপক্ষ গোল মুখে হানা দিলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।
বরং কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলেছে মুম্বই কোচই। তিনি সেটপিসকে কাজে লাগিয়ে প্রথমার্ধে সোনা ফলিয়েছেন ম্যাচে। তাঁর বিদেশীরা চলতি আসরে সেরা, সেটি বারবার দেখা গিয়েছে। ওগবেচে ২০০২ বিশ্বকাপে নাইজেরিয়া দলে ছিলেন। তাঁর বয়স বাড়লেও খেলার ধার কমেনি।
খেলা শেষে মুম্বই দলের হাতে গ্রুপ পর্বে শীর্ষে থেকে শেষ করার জন্য এবং এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার মতো সোনালি সাফল্য পাওয়ার জন্য ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। তারা যোগ্য দল হিসেবেই এশিয়ার সেরা লিগে খেলতে যাবে। মোট ৩৫টি গোল করেছে মুম্বইয়ের তারকারা। দুটি দলই ৪০ পয়েন্টে শেষ করলেও গোলপার্থক্যের কারণেই হাবাসের দলকে টেক্কা দিল মুম্বই দলটি।