
অশোক মালহোত্রা
এই ব্যাটিং অর্ডারকে নিয়ে যত কম বলা যায় তত ভাল। একটা দলের একটা বা দুটো ব্যাটসম্যান খারাপ ফর্মে থাকতে পারে, কিন্তু তাই বলে গোটা ব্যাটিং ইউনিটই যদি খারাপ ফর্মে থাকে তাহলে যা হওয়ার সেটাই হল আবু ধাবিতে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে আবার একটা লজ্জার হার হল কলকাতা নাইট রাইডার্সের। কলকাতার করা ৮৪ রান হাসতে হাসতে তুলে নিল বিরাট বাহিনী। ৮ উইকেটে কলকাতাকে হারিয়ে প্লে-অফের আরও কাছ চলে গেল বিরাটরা।
কলকাতার ম্যানেজমেন্টকে একটা কথা বুঝতে হবে রোজ রোজ মিরাকল হয় না। কোনও দিন সুনীল নারিন, কোনও দিন লকি ফার্গুসন জিতিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ধারাবাহিক সাফল্য পেতে হলে ব্যাটিং ও বোলিং দুই ব্রিগেডকেই দায়িত্ব নিতে হয়। আর ব্যাটিংয়ে ডাহা ফেল কলকাতা। একমাত্র মরগ্যান ছাড়া নিয়মিত রানের মধ্যে নেই কোনও ব্যাটসম্যান।
শুবমান গিলকে দেখে মনে হচ্ছে টেস্ট খেলার মানসিকতা নিয়ে নামছে। তাও প্রথমে কিছু ম্যাচে রান পেয়েছে গিল। আজ পায়নি। আর এক ওপেনার রাহুল ত্রিপাঠি একটা ইনিংস খেলে আর রান পায়নি। নীতীশ রাণা ধারাবাহিক ব্যর্থ। দু-একটা ম্যাচ ছাড়া রান পায়নি দীনেশ কার্তিকও। একটা টিমের টপ অর্ডার এই অবস্থায় থাকলে কী ভাবে ম্যাচ জিতবে তারা।
গত দুই মরসুমে কেকেআরকে একাই টেনেছিল আন্দ্রে রাসেল। সেও এবার ফর্মে নেই। তার বদলে খেলানো হল টম ব্যান্টনকে। রান পায়নি এই বিদেশিও। মরগ্যান আর ফার্গুসন না থাকলে আজ হয়তো ৫০ পেরত না নাইটদের। মরিস, সিরাজ, নবদীপ সাইনিদের পেস, কিংবা চাহাল, ওয়াশিংটন সুন্দরের স্পিন কিছুই সামলাতে পারল না কলকাতার ব্যাটসম্যানরা। মরগ্যানের ৩০ ও লকি ফার্গুসনের ১৯ রানের দৌলতে ২০ ওভারে ৮৪ রান করল নাইটরা। কলকাতার ইনিংসে ৪টে মেডেন ওভার হয়েছে এদিন, যা রেকর্ড।
এই রান তাড়া করতে যে ব্যাঙ্গালোরকে বিশেষ বেগ পেতে হবে না তা আগেই বোঝা গিয়েছিল। কিন্তু ভেবেছিলাম যে উইকেটে সিরাজরা এত ভাল বল করল সেখানে কিছুটা লড়াই দেবে কলকাতা। কিন্তু এদিন ব্যাটিংয়ের মতো ব্যর্থ বোলিংও। পাওয়ার প্লে-তে উঠল ৪৫ রান। আগের ম্যাচের নায়ক লকি ফার্গুসনকে আনা হল পাওয়ার প্লে-র পরে। নিজের দ্বিতীয় বলেই উইকেট নিল সে। যে বোলার ফর্মে রয়েছে তাকে এত পরে আনার কারণ কী, তা নাইট ম্যানেজমেন্টই জানে।
অবশ্য তাতে কোনও সমস্যা হয়নি ব্যাঙ্গালোরের জিততে। মাত্র ১৩.৩ ওভারেই জয় তুলে নিল তারা। এই জয়ের সঙ্গে ১২ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেল ব্যাঙ্গালোর। অন্যদিকে আর একটা বিশাল হারে রানরেট সবথেকে খারাপ জায়গায় কেকেআরের। পিছন থেকে তাড়া দিচ্ছে রাজস্থান ও পাঞ্জাব। কলকাতার যা সাম্প্রতিক ফর্ম তাতে অষ্টমীর দুপুরে মরণ বাঁচন ম্যাচ দিল্লির বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচে জিতলে ভাল। নইলে পুজোটা মোটেই ভাল যাবে না কেকেআর সমর্থকদের কাছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর- কলকাতা নাইট রাইডার্স ৮৪/৮। মরগ্যান ৩০। সিরাজ ৮/৩, চাহাল ১৫/২। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ৮৫/২। পাড্ডিকাল ২৫, গুরকীরত সিং ২১। লকি ফার্গুসন ১৭/১। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ৮ উইকেটে জয়ী।