
‘সুপারম্যান’ পুরানকে কুর্নিশ শচীনের, জীবনে দেখা সেরা ফিল্ডিং, মন্তব্য মাস্টার ব্লাস্টারের
দ্য ওয়াল ব্যুরোঃ সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলেছে ক্রিকেটও। একটা সময়ে যে রান তাড়া করতে ৬০ ওভার সময় লাগত তা এখনকার টি ২০ জমানায় ২০ ওভারে হেসেখেলে হয়ে যাচ্ছে। ঠিক তেমনটাই আগে যে ফিল্ডিংয়ের কল্পনাও কেউ করেননি তা এখন হামেশাই দেখা যাচ্ছে। বাউন্ডারি লাইনে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ ধরে তা শূন্যে ছুড়ে দিয়ে একবার বাউন্ডারির বাইরে বেরিয়ে ফের ভেতরে এসে ক্যাচ ধরা তো এখন প্রায় প্রতি ম্যাচেই দেখা যায়। এমনকি রিলে ক্যাচ অর্থাৎ দু’জনে মিলে কোনও ক্যাচ পূর্ণ করাও এখন প্রায় দেখা যায়। কিন্তু রবিবার আইপিএলে নিকোলাস পুরান যা করলেন, সেটা কে কবে দেখেছে।
আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে খেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের তরুণ ক্রিকেটার নিকোলাস পুরান। ব্যাট হাতে তিনি যেমন ভয়ঙ্কর তেমনই ফিল্ডিংয়েও দুরন্ত। আর তাই ক্রিস গেইলের মতো ‘ইউনিভার্স বস’কে বসিয়ে তাঁকে খেলানো হচ্ছে দলে। আর কেন তিনি কোচ কুম্বলে, অধিনায়ক লোকেশ রাহুলের এত পছন্দের তা আরও একবার দেখালেন পুরান।
রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে শারজার মাঠে প্রথমে ব্যাট করে ২২৩ রান তোলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। মায়াঙ্ক আগরওয়ালের সেঞ্চুরি ও লোকেশ রাহুলের হাফসেঞ্চুরির পরেও শেষে পুরানের ৮ বলে ২৫ রানের দৌলতেই ২২৩ রানে পৌঁছয় পাঞ্জাব। তিনটি বিশাল ছক্কা হাঁকান তিনি।
তবে পুরান খবরের শিরোনামে তাঁর ফিল্ডিংয়ের জন্য। রাজস্থানের হয়ে শুরু থেকেই স্টিভ স্মিথ ও সঞ্জু স্যামসন দুরন্ত খেলছিলেন। ১০-এর উপর রান রেটে রান উঠছিল। ম্যাচের ৮ নম্বর ওভারে মুরুগান অশ্বিনের একটি বল মিড উইকেটের উপর দিয়ে মারেন সঞ্জু। সবাই ভাবেন নির্ঘাত ছক্কা। কারণ বাউন্ডারি লাইনের অনেকটা বাইরে গিয়ে পড়ছিল বল। তখনই দেখা গেল ‘সুপারম্যান’ পুরানকে।
বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা পুরান শূন্যে ঝাঁপিয়ে বাউন্ডারি পেরিয়ে বল নিজের বাঁ হাতে তালুবন্দি করেন। সেই সময় তাঁর পুরো শরীরটাই শূন্যে ভাসছে। তিনি জানতেন শরীর মাটিতে পড়লেই ছক্কা। তাই অবস্থাতেই বাঁ হাত থেকে বলটি ছুড়ে মাঠের মধ্য ফেলে দেন। ফলে ৬ রানের জায়গায় মাত্র ২ রান হয়। আর এই পুরো ঘটনাটি হয় সেকেন্ডের ভগ্নাংশে।
এই ফিল্ডিং দেখে হতবাক ক্রিকেট দুনিয়া। বর্তমান ও প্রাক্তন ক্রিকেটার থেকে ক্রিকেট সমর্থক, কেউই বিশ্বাস করতে পারছেন না, এভাবে কেউ ফিল্ডিং করতে পারে। ১০০ বারের মধ্যে ৯৯ বার ওই রকমের পরিস্থিতিতে ছক্কা হবে। ফিল্ডার খুব চেষ্টা করলে হয়তো বল হাতে লাগাতে পারেন। কিন্তু ওভাবে তা ধরে ভিতরে ছুড়ে দেওয়া। ক্রিকেটের সেরা ফিল্ডারদের থেকেও এই ধরনের ফিল্ডিং এর আগে দেখা যায়নি।
#Pooran Catch 🔥😰
This is Tribute for BAZZ birthday ❤️ @Bazmccullum pic.twitter.com/hXTyhoYq5M— ᴊᴀᴍᴇꜱ ᴡᴀʟᴋᴇʀ ᴄsᴋ (@JamesWalker_Off) September 27, 2020
রাতেই টুইট করে পুরানের প্রশংসা করেন মাস্টার ব্লাস্টার শচীন তেণ্ডুলকর। টুইটে তিনি লেখেন, “এটা আমার জীবনে দেখা সেরা ফিল্ডিং। সত্যিই অবিশাস্য।”
This is the best save I have seen in my life. Simply incredible!! 👍#IPL2020 #RRvKXIP pic.twitter.com/2r7cNZmUaw
— Sachin Tendulkar (@sachin_rt) September 27, 2020
শুধু শচীন নন, ক্রিকেট দুনিয়ার প্রায় সবাই বলছেন তাঁরা জীবনে এই ধরনের ফিল্ডিং দেখেননি। অনেক ভাল ভাল ক্যাচ ও ফিল্ডিং সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গিয়েছে। কিন্তু সে সবকে ছাপিয়ে গিয়েছেন পুরান। অনেকে আবার মজা করে বলছেন, যে দলের ফিল্ডিং কোচ জন্টি রোডস সেই দলের ফিল্ডারের পক্ষেই এই কাণ্ড ঘটানো সম্ভব।