
বাবার ‘খাটিয়া প্র্যাকটিস’ আর কারসন ঘাউড়ির জহুরির চোখ, দুইয়ের মিলেই ইস্পাত কঠিন শুবমান
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বেশ কিছু সিরিজ ধরে ভারতীয় স্কোয়াডের সঙ্গে ঘুরছিলেন তিনি। ভারতীয় এ দলে সুনামের সঙ্গে খেললেও জাতীয় দলে সুযোগ মিলছিল না। কিন্তু যখন মিলল, তখন তাকে পুরোপুরি ব্যবহার করলেন শুবমান গিল। অস্ট্রেলিয়া সফরে তিন টেস্টে দুটি হাফসেঞ্চুরি। তার মাঝে ব্রিসবেনে গুরুত্বপূর্ণ ৯১ রান, যে রানের উপর ভর করেই জয়ের ভিত গড়েছিল ভারত। এই পরিণত মানসিকতা কোথা থেকে পেলেন শুবমান। তার জন্য বলতেই হবে দুটি নাম। এক, বাবা লখিন্দর সিং গিল ও দুই, ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার কারসন ঘাউড়ি।
অনুর্ধ্ব ১৯ পর্যায়ে পেসার তুলে আনার জন্য মোহালিতে ক্যাম্পের দায়িত্ব ছিল কারসন ঘাউড়ির। সেখানেই ক্যাম্পের বাইরে কয়েকটি বাচ্চা ছেলের মধ্যে একটি ছেলে নজর কাড়ে তাঁর। তাঁকে মোহালির ক্যাম্পে নিয়ে আসেন তিনি। সেখানে অনুর্ধ্ব ১৯ পেসারদের প্রায় দেড় ঘণ্টা খেলেছিল ১২ বছরের ওই বাচ্চা। তখনই ঘাউড়ি বুঝে গিয়েছিলেন, ভবিষ্যতের এক তারকা ক্রিকেটার তিনি পেয়ে গিয়েছেন। পাঞ্জাব ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে বলে পাঞ্জাবের অনুর্ধ্ব ১৬ দলে সুযোগ করে দেন শুবমান গিলকে। তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
তবে শুবমানের এই লড়াইয়ের পিছনে রয়েছে আর এক লড়াই। শুবমানের বাবা লখিন্দর সিং গিলের লড়াই। তিনিও ক্রিকেট খেলতেন। কিন্তু সুযোগ না পাওয়ায় সেভাবে সফল হতে পারেননি। তাই ছেলের মধ্যে দিয়ে সেই স্বপ্ন সত্যি করতে চেয়েছিলেন তিনি। চক খিরাওয়ালা গ্রাম থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে মোহালিতে ছেলেকে নিয়ে এসেছিলেন। ছোট থেকে নিজেই খেলা শেখাতেন শুবমানকে। রোজ ৩০০ থেকে ৪০০ বল করতেন। আর সেখানেই হত খাটিয়া প্র্যাকটিস। খাটিয়ার দড়িতে জোরে বল ছুড়তেন লখিন্দর। সেই বল আরও জোরে আসত শুবমানের দিকে। তাকে সেগুলো সামলাতে হত। অস্ট্রেলিয়ার পেস অ্যাটাককে যেভাবে শুবমান সামলালেন সেটার পিছনে যে লখিন্দরের খাটিয়া প্র্যাকটিসের অনেক প্রভাব রয়েছে তা বলাই যায়।
কয়েক বছর আগে কল্যাণীতে বাংলার বিরুদ্ধে রঞ্জি ম্যাচ খেলতে এসেছিল পাঞ্জাব। তখন পাঞ্জাব দলে খেলেন যুবরাজ সিং। স্বভাবতই ক্যামেরা তাঁর দিকেই। সেখানেই শুবমানকে দেখিয়ে যুবি বলেছিলেন তিনি ভবিষ্যতের তারকা। অর্থাৎ যুবিও চিনেছিলেন এই তরুণ পাঞ্জাব তনয়কে। আর অস্ট্রেলিয়ায় তিন টেস্টের সিরিজে তাঁকে চিনে নিল গোটা ক্রিকেট দুনিয়া।
