
ভুল কৌশল না নিলে এই কেকেআর হারবে না
অশোক মালহোত্রা
আমি এর আগেও বলেছি এই কেকেআর দলের প্রধান সম্পদ হল তরুণ ক্রিকেটাররা। শুভমান গিল, শিবম মাভি, কমলেশ নাগরকোটিরা দলের সিনিয়রদের সঙ্গে এমনভাবে মিশে গিয়েছে যে মনেই হচ্ছে দলটি এক সুতোয় বাধা। তাই শনিবার শারজায় দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে কেকেআরই ফেভারিট হিসেবে শুরু করবে।
এবারের আইপিএলে ‘ইয়ং ব্লাড’দের, সেটি যত এগোচ্ছে টুর্নামেন্ট ততই বোঝা যাচ্ছে। এজন্য আমি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ দেব। তারা একটা আইপিএল দলে দু’জন অনুর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেটার রাখা বাধ্যতামূলক করেছে, এটা ভাল সংকেত। সেই কারণেই ব্রাজিলে যেমন প্রতিদিন ফুটবলারের জন্ম হয়, এখন ভারতেও প্রতিদিন ক্রিকেটারের জন্ম হচ্ছে, আর এজন্য কৃতিত্ব দাবি করতে পারে বিসিসিআই।
এবারের আইপিএলে প্রথম ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে দেখে আমার ভাল লাগেনি। শুধু আমার কেন, কেউই আশা করেনি নাইটদের এই খেলা। কিন্তু পরের ম্যাচ থেকেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ফিরে এসেছে দলের ক্রিকেটাররা।
এই দলের যিনি কোচ ব্র্যান্ডন ম্যাকমিলান বড় তারকা, যিনি জানেন বড় আসরে কিভাবে মেলে ধরতে হয়। তাই পেশাদারি মোড়কে দলটিকে তৈরি করেছেন। কারণ একটা বড় টুর্নামেন্টে শুরুতেই হাতের তাস দেখিয়ে দিতে নেই। সবসময় হাতে গোপন তাস রেখে খেলতে হয়। একটা করে ম্যাচে একেকটি তাস বের করতে হয়, সেটাই করছেন ম্যাক।
নাইট দলে এমনিতে কোনও সমস্যা নেই। রাসেল আগের ম্যাচে ২৪ রান করলেও ও জেনে গিয়েছে রানের গন্ধ, কী করলে আরও বড় লক্ষ্যে পৌঁছনো যায়। মরগ্যান থাকা মানে একটা দলের টিম ম্যানেজমেন্টের বড় ভরসা। তিনি পিছনে থাকা মানে দলের বাকি ক্রিকেটাররা জানে টিমের বড় দাদা রয়েছে, ও ঠিক সামলে নেবে। এটাই মরগ্যানের নামের ক্যারিশমা।
নাইট দলে সমস্যা বলতে একটাই, সেটি ওপেনিং। শুভমানের সঙ্গে নারিনকে পাঠিয়ে লাভ হচ্ছে না। নারিনকে সবাই রিড করে ফেলেছে, তাই ও সেই কারণেই আটকে যাচ্ছে। গিলের সঙ্গে পাঠানো হোক দীনেশ কার্তিক কিংবা রাহুল ত্রিপাঠিকে। গিলের সঙ্গে আমি চাইছি একজন সিনিয়র যাক, তাতে ওকে গাইড করে একটা দিক ধরে রাখতে পারবে। দুই জুনিয়র গেলে চাপ পড়ে যাবে, দুইজনই চালাবে, তাতে শুরুতে উইকেট চলে গেলে বাকিদের কাছে চাপ হয়ে যাবে।
কার্তিক ও গিল ওপেনিংয়ে নামুক, তিনে আসুক নীতিশ রানা, চারে রাসেল, পাঁচে মরগ্যান। ছয়ে নামুক নারিন, তা হলে দলের ব্যাটিং লেজ অনেকটা বড় হয়ে যাবে। বিপক্ষও চাপে থাকবে অবিরাম। আমি সেই কারণেই বলছি এই কেকেআর তখনই কোনও ম্যাচ হারবে যদি কোচ ও ক্যাপ্টেনের বড় কোনও কৌশলগত ভুল থাকে, না হলে এই জয়ের অশ্বমেধের ঘোড়া ছুটতেই থাকবে।