
‘অর্জুন’ হওয়ার আট বছরের মধ্যে টিটি-র মৌমা এবার ‘পদ্মশ্রী’
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বঙ্গ টেবল টেনিসের অন্যতম রাণী মৌমা দাসের মুকুটে এবার নয়া পালক সংযোজিত হতে চলেছে। তিনি ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কারে ভূষিত হতে চলেছেন ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে।
মৌমা এর আগে ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রের সর্বোচ্চ সম্মান অর্জুন পুরস্কার পেয়েছিলেন ২০১৩ সালে। তার ঠিক আটবছরের মধ্যেই আরও বড় সম্মান তিনি অর্জন করলেন। ৩৬ বছর বয়সী মৌমা বাংলা টেবল টেনিসের অন্যতম সেরা প্রতিভা ও আইকনও। তিনি সিনিয়রে মোট ৮বারের জাতীয় খেতাব ধারী।
পাশাপাশি মৌমার ঝুলিতে রয়েছে বহু আন্তর্জাতিক পদক। তিনি তিনটি অলিম্পিকে ভারতের হয়ে অংশ নিয়েছেন। তিনি মোট ১৭ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে পদকও পেয়েছেন। এমনকি মৌমা ১৯ বার কমনওয়েলথ টিটিতে পদক নিয়ে এসেছেন।
মৌমার টেবল টেনিস কেরিয়ার নয় নয় করে মোট ৩০ বছরের। তিনি ভারতের হয়ে সেই ১৯৯৭ সাল থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিনিধিত্ব করছেন। নারকেলডাঙার এই তারকা গত বছরেই মা হয়েছেন। তারপরেই এমন সাফল্যে তিনি একপ্রকার উচ্ছ্বসিত। বলেছেন, ‘‘এখনও অবসর তো নিইনি, আরও ভাল করার খিদে বেড়ে গেল।’’

মৌমা বলছিলেন, ‘‘আমাকে সোমবার সকালেই কেন্দ্র মন্ত্রক থেকে টেলিফোন করে খবরটি জানায়। কিন্তু আমি বাড়ির সবাইকে নিষেধ করে দিয়েছিলাম। বলে দিই যতক্ষণ না ঘোষণা করছে, ততক্ষণ কাউকে বলো না। তবে আমি দারুণ খুশি, কারণ করোনাভাইরাসের বছরে একেবারে হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। কী খিদে নিয়ে শুরু করব, সেটাই ভাবতে পারছিলাম না। এই পুরস্কার আমাকে আরও দিশা দেখাবে।’’
মৌমা রাতে আরও জানালেন, ‘‘বাড়ির সবাই বলছে মেয়ে হওয়ার পরে যখন এত বড় সরকারি স্বীকৃতি পেলাম, তাই আমি আমার দুই বছরের মেয়ে অদ্রিতিকে এই পুরস্কার উৎসর্গ করছি। এবার আমারও অনেক দায়িত্ব বেড়ে গেল।’’
মৌমার সবচেয়ে বড় গুণ হল তাঁর ধারাবাহিকতা। তাঁর সময়ে শুরু করে বহু তারকা কোচ হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু মৌমা অবিচল লক্ষ্যে এগিয়ে গিয়েছেন। পাশে পেয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার স্বামী কাঞ্চনকে। তিনিও এই ঘটনায় আপ্লুত। বলছিলেন, ‘‘মৌমা অবশেষে আরও বড় স্বীকৃতি পেল। ওঁর লড়াইকে আমিও শ্রদ্ধা করি।’’
মৌমা ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন ক্রীড়া ইভেন্ট থেকে পদ্মশ্রী পুরস্কার পেতে চলেছেন পি অনিথা, মাধবন নাম্বিয়ার, সুধা হরি নারায়ন সিং, বীরেন্দর সিং, কেওয়াই বেঙ্কটেশও এই সম্মান পাবেন।