
১৯৮৬ সালে আজটেক স্টেডিয়ামে মারাদোনার খেলা দেখেছিলাম, এই ভাগ্য দুনিয়াতে কজনের হয়েছে?
গৌতম সরকার
সারা দুনিয়াই বাকরুদ্ধ। সারা দুনিয়া স্তবির। আমি কাঁদছি, আমার মেয়েও কাঁদছে। বিশ্বের সব প্রজন্মকে এক করে দিয়েছিলেন যিনি, সেই মানুষটা চলে গেলেন চিরঘুমে, কাউকেই বুঝতেই দিলেন না, এখানেও হ্যান্ড অব গড।
দিয়েগো মারাদোনা নিয়ে কী বলব? কী বলার রয়েছে? কতটুকুই বা বলতে পারি। যদি প্রথম ও শেষ কথাটি বলতে বলা হয় ওঁর নামে, তা হলে আমি বলব, ১৯৮৬ সালে মেক্সিকোর আজটেক স্টেডিয়ামে মারাদোনার হাতে কাপ দেখেছিলাম নিজের চোখে, বিশ্বসেরার কাপ।
আমি সেইবার কলকাতার একটি নামী সংবাদপত্রের রিপোর্টার হিসেবে ওই বিশ্বকাপ কভার করতে গিয়েছিলাম, সেই বিশ্বকাপ মানেই তো মারাদোনার বিশ্বকাপ। তাঁকে আমি সামনে থেকে দেখেছিলাম। তাঁর হাতে বিশ্বসেরার কাপ দেখেছিলাম।
মারাদোনা মানেই আর্জেন্টিনা, মারাদোনা মানেই ফুটবল ঈশ্বর। তাঁর মৃত্যু নেই, তাঁর মৃত্যু হতে পারেই না। তিনি অবিনেশ্বর। সেই বিশ্বকাপে দেখেছিলাম একটা মানুষ একার কাঁধে কিভাবে দেশকে বিশ্বকাপ এনে দিল। আমি তাঁর কাছে যেতে পেরেছিলাম।
একটা মানুষ ৬০ বছর জীবনে এতকিছু করেছেন, বলে শেষ করা যাবে না। তিনি মানুষ নন, তিনি ঈশ্বরই। তাঁর মতো খেলা আমরা দেখেনি, তিনি অবসর নেওয়ার পরে আর কেউ আসেনি। তিনি আমাদের মনেই থেকে যাবেন
বলা হয়, লিওনেল মেসি নাকি মারাদোনার মতো। এই তুলনা আসে না। মারাদোনা যা করেছেন, বিশ্বের কেউ পারেনি। পেলের পাশে বাকিরাও সুপারস্টার ছিলেন, মারাদোনার পাশে ছিলেন বরুচাগারা, সেই মানেরও নয়, তবুও তিনি সুপারস্টার।
যতদিন বেঁচে থাকব ৮৬ সালের ওই স্মৃতি মাথায় থাকবে। কত সাধারণ একটা ঘর থেকে উঠে এসে রূপকথার উত্থান হয়েছিল।
মারাদোনা মানে একটা ফুটবল সংসার, তিনি মানে ফুটবলের মহানায়ক। আর কোমও বিশেষণ মাথায় আসছে না। তিনি কী ছিলেন, তাঁর আচরণ কী ছিল, এগুলি এই সময়ে কথা বলার সময় নয়।
ফুটবল যতদিন থাকবে, মারাদোনাও থাকবেন একইভাবে।