
ট্রফি এনে দিতে পারেননি, বিশ্বজয়ী ইতালি অধিনায়ককে আটক করে রাখা হল কাতারের হোটেলে
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কোনও বিশ্বজয়ী প্রাক্তন ডিফেন্ডারকে, যিনি আবার একসময় ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন, তেমন মাপের এক ফুটবলারকে কাতারের হোটেলে আটকে রাখা হয়েছিল। তাও আবার এক-দু’দিন নয়, টানা বারোদিন ইতালিয়ান সুপারস্টার ফাভিও কানাভারোকে ওই ভাবে আটক করে রাখা হয়।
এমন জঘন্য কাজ করেছেন চিনের একটি ক্লাব গুয়াংজু এভারগ্রান্দের কর্তারা। কানাভারোর অপরাধ, তাঁর কোচিংয়ে ওই দলটি এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেতাব জিততে পারেনি। তাই কানাভারোসহ তাঁদের পুরো কোচিং স্টাফদের কাতারের একটি হোটেলে আটকে রাখা হয়েছিল।
এই ব্যালন ডি’অরজয়ী ইতালিয়ান ডিফেন্ডারের দুর্দান্ত ফর্মে ইতালি জিতেছিল ২০০৬ সালের জার্মানিতে হওয়া বিশ্বকাপ। এই শতকের প্রথম ডিফেন্ডার হিসেবে হয়েছিলেন বিশ্বের সেরা ফুটবলার, জিতেছিলেন ফিফার বর্ষসেরা ট্রফিও। সেই ২০১৪-১৫ মরসুম থেকে দুই মেয়াদে কোচ হয়েছেন ওই চাইনিজ ক্লাবটির। এর আগে ক্লাবটাকে চিনের সুপার লিগ ও এফএ সুপার কাপ জেতালেও তারপর থেকে ক্রমেই ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়েছে তাঁর।
সেই সম্পর্কের অবনতি যে এভাবে তাঁকে অপমানিত করা হবে, কেউ ভাবতেও পারেনি। এবার জিয়াংসু সুনিংয়ের কাছে লিগ শিরোপা হারিয়েছে গুয়াংজু। একে তো লিগ জিততে পারেননি, তারপর এবার এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের পরের রাউন্ডেও উঠতে পারেনি। প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছে।

গুয়াংজুকে টপকে একই গ্রুপ থেকে পরের রাউন্ডে জায়গা করে নিয়েছে জাপানের ক্লাব ভিসেল ক্লবে (যে ক্লাবে খেলছেন আন্দ্রে ইনিয়েস্তা) ও দক্ষিণ কোরিয়ার ক্লাব সুসোন স্যামসাং ব্লুউইংস। আসরের শেষ ম্যাচে দোহাতেই ব্লুউইংসের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে পরের রাউন্ডে ওঠার সুযোগ হারায় কানাভারোর দল।
ক্লাব কর্তাদের দাবি, কোচ যত বড় ফুটবলারই হোক না কেন, যাঁর জন্য আমাদের প্রতিবছর দেড় কোটি ইউরো দিতে হচ্ছে, তিনি কোচ হিসেবে কেন ব্যর্থ হবেন! তারপরেই কানাভারোকে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়, তাঁকেসহ পুরো কোচিং টিমকে চিনে ফেরত পাঠানো হয়নি। রেখে দেওয়া হয় কাতারে হোটেল চত্বরেই। হোটেলের বাইরেও তাঁদের বেরনো নিষেধ ছিল।
প্রথমে ভাবা গিয়েছিল, করোনা পরিস্থিতির কারণে কানাভারোদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। কিন্তু ওই কোচিং স্টাফের কেউ যোগাযোগ করেন ইতালি দূতাবাসের সঙ্গে। তারপরেই বিষয়টি সমাধান হয়। পরে এই খবরটি ফাঁস হয়ে যেতেই গুয়াংজু কর্তারা মুখ লুকোচ্ছেন।