
দ্য ওয়াল ব্যুরো, জলপাইগুড়ি: স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ তুলে নিশ্চয় যান পরিষেবা বন্ধ করে দিলেন মালিকেরা। চরম ভোগান্তির শিকার প্রসূতি মায়েরা। স্বাস্থ্য দফতরের পাল্টা বক্তব্য, ভুয়ো বিল করছেন অ্যাম্বুল্যান্স মালিকরা।
কাটমানি দেওয়া হয়নি বলে বিলের প্রাপ্য টাকার পরিমাণ কমিয়ে বিলের টাকা দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। অভিযোগ এমনটাই। আর এই অভিযোগ তুলেই নিশ্চয় যান (প্রসূতিদের জন্য অ্যাম্বুল্যান্স) পরিষেবা বন্ধ করে দিলেন নিশ্চয় যান মালিকেরা। আচমকাই পরিষেবা বন্ধ হওয়ায় হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে খোলা আকাশের নীচে সদ্যোজাতকে কোলে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হল প্রসূতি মায়েদের। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল চত্বরে এমন হয়রানির শিকার হয়ে স্বাস্থ্য দফতরকে দুষলেন ভুক্তভোগীরা।
জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল মিলিয়ে নিশ্চয় যানের সংখ্যা ১১৬ টি। এর মধ্যে সদর হাসপাতালে পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ১৮ টি নিশ্চয় যান। ২০১৫ সাল থেকে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সগুলি নিশ্চয় যানের পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছে। প্রসূতিদের হাসপাতালে নিয়ে আসা এবং সদ্যোজাত ও মাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে থাকে এই অ্যাম্বুল্যান্সগুলি।
লক্ষ্মী রায় নামে এক প্রসূতি জানালেন, বুধবার দুপুরের পর তাঁর ছুটি হয়েছে। ময়নাগুড়িতে তাঁর বাড়ি। অ্যাম্বুল্যান্স না পাওয়ায় সদ্যোজাত কন্যাসন্তান নিয়ে রোদের মধ্যে প্রায় চার ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। খুবই বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তাঁদের। লক্ষ্মী রায়ের বাবা সুভাষ রায় জানান, সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স ছিল না। কর্তৃপক্ষকে সমস্যার কথা বারবার জানানো হলেও কোনও সুরাহা হয়নি।
নিশ্চয় যান অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক দিলীপ দাস বলেন, “আমরা কিলোমিটার প্রতি এই মুহূর্তে আট টাকা করে পেয়ে থাকি। পেট্রলের দাম বাড়লেও কিলোমিটার প্রতি টাকা বাড়ানো হয়নি। উল্টে যে বিল করা হয়েছে সেই বিলের টাকা থেকে একাংশ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। টাকা ফেরতের দাবি জানাতে গেলে চালকদের কাছে গাড়ি পিছু দু’হাজার টাকা করে দাবি করেন স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক। তাই আমরা পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছি।”
জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাক্তার রমেন্দ্রনাথ প্রামানিক বলেন, “নিশ্চয় যান চালকেরা ভুয়ো বিল করেছেন। যেই এলাকা যাতায়াত করলে ৭০ কিলোমিটার পথ হয়, সেখানে তাঁরা দু’শো কিলোমিটার পথ দেখিয়ে বিল করেছেন। তাই তাঁদের বিল থেকে টাকা কাটা হয়েছে। এই সমস্যা মেটাতে সময় লাগবে। এঁরা যদি পরিষেবা না দেন তবে আমরা বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবব।” কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ মানতে চাননি তিনি।