
দ্য ওয়াল ব্যুরো, হুগলি: এলাকায় ভাল ছেলে হিসেবে পরিচিত যুবকের বাড়িতে বুধবার সকালে বিশাল পুলিশ বাহিনীকে ঢুকতে দেখে হকচকিয়ে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে তাঁরা জানতে পারেন বাড়িতেই আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানা করেছিল অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমাপ্রাপ্ত যুবক সুজাত গোস্বামী। সেই কারখানাতেই হানা দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, শ্রীরামপুরের পুরোনো বসতি গোস্বামীপাড়ার বাসিন্দা সুজাত। অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেছিলেন। কিন্তু চাকরি পাননি কোনও। সোমবার রাতে নির্দিষ্ট সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ সাউথ পোর্ট থানার স্ট্রান্ড রোড থেকে গ্রেফতার করে সুজাতকে। সঙ্গে পাকড়াও করা হয় মহম্মদ সাহিদ নামে আরও একজনকে। তাদের কাছে থেকে উদ্ধার হয় আটটি দেশি ওয়ান শটার বন্দুক। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে সুজাতের বাড়ি শ্রীরামপুরে। তারপরেই শ্রীরামপুর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে কলকাতা পুলিশ।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে শ্রীরামপুরের জলকল মাঠ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রমেশ দাস ওরফে লেঙড়িকে জেরা করেও সুজাতের নাম জানতে পারে পুলিশ। জেরার মুখে ধৃত রমেশ জানায়, সুজাতের থেকেই আগ্নেয়াস্ত্রটি কিনেছিল সে। এরপরই শ্রীরামপুর থানার পুলিশ সুজাতর বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায়। পুলিশ জানিয়েছে, তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ, ম্যাগাজিন ও লেদ মেশিন।
পুলিশের অনুমান, অনেকদিন ধরেই বাড়িতে অস্ত্র তৈরির কারবার ফেঁদেছিল সুজাত গোস্বামী। নানা জায়গা থেকে অস্ত্রের কারবারিরা তার বাড়িতে এসে এইসব অস্ত্র নিয়ে যেতো। জলকলমাঠ থেকে ধৃত রমেশও একাধিকবার সুজাতর কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। পুরো চক্রের হদিশ পেতে ধৃতদের আরও জেরা করা দরকার বলে মনে করছে পুলিশ।
চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘লেখাপড়া জানা একটা ছেলে কেন এমন কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ল তা দেখা হচ্ছে। নিছক চাকরি না পেয়েই কি এই পথে না স্বভাবেই বেছে নিয়েছে এই পথ, তা খতিয়ে দেখছি আমরা।’’